এটিএম কার্ড করতে কি কি লাগে জেনে নিন

এটিএম কার্ড করতে কি কি লাগে তা জানার আগে আপনার জানা উচিত এটিএম কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা গুলো কি কি। কেননা আপনি চাইলেই যেকোনো কার্ড ব্যাংক থেকে নিয়ে নিতে পারবেন না।…

ADVERTISEMENT

এটিএম কার্ড করতে কি কি লাগে তা জানার আগে আপনার জানা উচিত এটিএম কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা গুলো কি কি। কেননা আপনি চাইলেই যেকোনো কার্ড ব্যাংক থেকে নিয়ে নিতে পারবেন না। এখানে ব্যাংক আপনার কিছু যোগ্যতা দেখে তারপর আপনাকে জানাবে যে আপনি কোন কার্ডটি নিতে পারবেন।

একটি এটিএম কার্ড থাকার বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যেমন কেনা কাটা করার সময় কার্ডের ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি কিছু বিশেষ সুবিধা বা ডিসকাউন্ট নিতে পারেন। এছাড়া সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, আপনি এখানে ফ্রি মানি শপিং করার জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। তবে তা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবার আপনাকে রিটার্ন করে দিতে হবে।

ADVERTISEMENT

যাই হোক, এই পোস্টে আমরা দেখবো এটিএম কার্ড করতে কি কি লাগে, এটিএম কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা গুলো কি কি এবং অন্যান্য প্রয়োজনিয় কিছু প্রশ্নের উত্তর। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

এটিএম কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা কি?

একজন ব্যাক্তি এটিএম কার্ড নিতে পারবে কি পারবে না তা মূলত নির্ধারণ করে ব্যাংক কিছু যোগ্যতা সেট করার মাধ্যমে। এক্ষেত্রে ব্যাংক ব্যাক্তির ডকুমেন্টস, স্যালারী বা আনুষঙ্গিক বিষয়দি চেক এবং বিবেচনা করে। ব্যাংক ভেদে কার্ড পাওয়ার জন্য শর্তাবলী ভিন্ন। তবুও কিছু নিয়ম তো সব জায়গায় এক। এর মধ্যে কিছু নিয়ম নিচে দেখে নেয়া যাক।

ADVERTISEMENT
  • যে ব্যাংকের কার্ড আপনি নিতে চান সে ব্যাংকে আপনার একটি একাউন্ট থাকতে হবে।
  • উক্ত একাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা থাকতে হবে।
  • কার্ডের ধরণ অনুযায়ি আপনার মাসিক স্যালারির একটি সামঞ্জস্যতা থাকতে হবে।
  • আপনার পেশার সাথে সম্পর্কিত প্রয়োজনিয় কিছু ডকুমেন্টস দরকার হবে।
  • ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী আবেদনকারীর পক্ষে কয়েকজন জামিনদার এর স্বাক্ষর প্রয়োজন হতেও পারে।
  • ব্যাংক কর্তৃক নির্দিষ্ট ভেরিফিকেশন গুলোতে আবেদনকারী কে উত্তীর্ণ হতে হবে।
  • এছাড়া ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংকে ভিন্ন ভিন্ন ডকুমেন্টসের দরকার হতে পারে।

এটিএম কার্ড করতে কি কি লাগে?

কার্ড দেয়ার আগে ব্যাংক আপনার কিছু ডকুমেন্টস চেক করবে। এখানে আপনার পেশা কি তাও দেখা হবে এবং এর সাথে সাথে আপনার কিছু কাগজপত্র আপনাকে জমা করতে হবে ব্যাংকে। আপনার যেসকল ডকুমেন্টস জমা দেয়া লাগবে তা হলো:

  • জাতীয় পরিচয় পত্র।
  • TIN সার্টিফিকেট।
  • চাকুরিজিবীদের স্যালারি সার্টিফিকেট এবং তাদের বিগত তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
  • ব্যবসায়ি হলে ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স ও বিগত তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
  • কিছু কিছু কার্ডের ক্ষেত্রে ব্যাংক বয়স সিমা নিধারণ করে দেয়। কার্ড পাওয়ার জন্য প্রার্থীকে সেই বয়সধারী হতে হবে।

এটিএম কার্ড নেয়ার নিয়ম কি?

আপনার যদি এটিএম কার্ড নেয়ার ইচ্ছা থাকে তবে যেমনটা বলা হয়েছে যে, নিয়ম অনুযায়ি আপনার আগে ব্যাংকে একটি একাউন্ট করতে হবে। সেখানে ব্যাংকে আপনার কার্ড নেয়ার ইচ্ছার কথা জানাতে হবে। তারপর প্রয়োজন অনুযায়ি আপনার সকল ডকুমেন্টস জমা করতে হবে ও আরো যা যা লাগে তা দিতে হবে।

আপনার সকল ডকুমেন্টস গুলো চেক এবং কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা ব্যাংক কতৃক বিবেচিত হওয়ার পর আপনি একটি এটিএম কার্ড পাওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তারপর ব্যাংক আপনার আবেদন গ্রহণ করে একটি নির্দিষ্ট সময় নিবে কার্ডটি আপনাকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য। হতে পারে তা ৭-১০ দিন বা তার বেশি।

ADVERTISEMENT

এই সময় পর তারা আপনার কার্ড বুঝিয়ে দিবে। তবে এর জন্য চার্জ প্রযোজ্য হলে তারা আপনার একাউন্ট থেকে কেটে নিয়ে নিবে। এব্যাপারে আপনার আগেই তাদের সাথে কথা বলে নেয়া উচিত যে কার্ডের ফি এবং চার্জ কেমন হবে।

আরো পড়ুন- ক্রেডিট কার্ড নেয়ার আগে আরো যা জানা দরকার

অনলাইনে কার্ডের জন্য আবেদনের নিয়ম

অনেকে হয়তো অনলাইনে একাউন্ট খুলেছেন কিংবা খুলার কথা ভাবছেন। তারা হয়তো কখনো ব্যাংক ভিজিট করেন নি বা ভিজিট করার মতো সময় নেই। তাদের জন্যও কার্ড করার সহজ নিয়ম রয়েছে।

অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট করার সময় সেখানে তারা আপনাকে কিছু এক্সট্রা ফ্যাসিলিটি নেয়ার সম্পর্কে জিঙ্গেস করবে। সেখানে থাকতে পারে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা, চেক বুক সুবিধা, কার্ড সুবিধা বা আরো অন্যান্য সুুবিধা। এর মধ্যে আপনাকে কার্ড নেয়ার ব্যাপারে তাদের ইনফর্ম করতে হবে সুবিধাটি সিলেক্ট করার মাধ্যমে।

ADVERTISEMENT

অথবা কিছু ব্যাংকের নিজস্ব মোবাইল এপ আছে। সেখান থেকে আপনি ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তারপর কয়েক কার্যদিবষের মধ্যে তারা কোরিয়ারে আপনার কাছে আপনার কার্ড পাঠিয়ে দিবে। আবার হতেও পারে আপনাকে ব্যাংকে গিয়ে তা নিয়ে আসতে হবে।

আরো পড়ুন- জেনে নিন কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো

এটিএম কার্ড ব্যবহারের নিয়ম

কার্ড ব্যবহারে কিছু নিয়ম আছে, যেমন: কার্ডের গোপনিয়তা নিশ্চিত করা যেন আপনার কার্ডের তথ্য এমন কারো কাছে না চলে যায় যার মাধ্যমে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে। গোপনিয়তা নিশ্চিত করে আপনি এই কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন আপনার বিভিন্ন কাজে।

কার্ডে দরকার না হলে টাকা রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। এতে যে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। আর কার্ড অন্য কারো হাতে না দেয়াই ভালো।

কার্ড একেবারে ম্যাক্স আউট করা থেকে বিরত থাকা উচিত। সেই সাথে অপ্রয়োজনিয় কেনাকাটা বা ছোট লেনদেন গুলোতে কার্ড ব্যবহার না করা ভালো। আর সবসময় কার্ডের স্টেটম্যান্ট এর উপর নজর রাখা উচিত।

ADVERTISEMENT

ডেভিট কার্ড নাকি ক্রেডিট কার্ড নিবো?

ডেভিড কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য গুলো কি কি তা নিচে পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো যাতে আপনি আপনার সুবিধা এবং প্রয়োজন অনুযায়ি একটি কার্ড বাছাই করে নিতে পারেন।

ক্রেডিট কার্ডডেভিড কার্ড
১. এই কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করতে টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে পাওয়া যায়।১. এই কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করতে হলে গ্রাহকের একাউন্টে টাকা থাকতে হবে।
২. ব্যবহারকারীর কাছে অর্থ না থাকলেও ব্যবহার করা যাবে।২. যে কোনো প্রকার খরচের জন্য একাউন্টে টাকা থাকা বাধ্যতামূলক।
৩. এটি ব্যবহারকারীর একাউন্টের সাথে সংযুক্ত থাকে না।৩. এটি ব্যবহারকারীর একাউন্টের সাথে সংযুক্ত হয়ে থাকে।
৪. ক্রেডিট কার্ড মাল্টি কারেন্সির হতে পারে।৪. ডেভিড কার্ডে সাধারণত একটি একটি কারেন্সি (বিডিটি) প্রদান করে থাকে।
৫. ক্রেডিট কার্ডের বীপরিতে ব্যাংক ইন্সুরেন্স সুবিধা প্রদান করে থাকে।৫. ডেভিড কার্ডের বীপরিতে ব্যাংক ইন্সুরেন্স সুবিধা প্রদান করে না।
৬. ক্রেডিট কার্ডে জয়েনিং ফি, প্রসেসিং ফি, লেট পেমেন্ট ফি, বার্ষিক ফি প্রদান করতে হয়।৬. ডেভিড কার্ডে কোনো প্রকার সুদ বা মুনাফা দিতে হয় না।
কারণ ডেভিড কার্ড দিয়ে গ্রাহক নিজের টাকা নিজেই উত্তোলন করে থাকে।
৭. ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকের কাছে কোনো স্টেটম্যান্ট প্রদান করা হয়।৭. ডেভিড কার্ডের গ্রাহকের কাছে স্টেটম্যান্ট প্রদান করা হয় না।
৮. ব্যাংক হিসাবধারী যেকেউ ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন না।৮. ব্যাংক হিসাবধারী যেকেউ চাইলে ডেভিড কার্ড নিতে পারবেন।
৯. এটিএম থেকে টাকা বের করলে এর বীপরিতে ইন্টারেস্ট কাটা হবে।৯. এটিএম থেকে টাকা বের করলে এর বীপরিতে ইন্টারেস্ট কাটা হবে না।
ডেভিড কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে পার্থক্য।

এখানে উল্লেখিত এসকল পার্থক্য ছাড়াও আরো অনেক পার্থক্য আছে। এখানে কমন পার্থক্য গুলো তুলে ধরা হয়েছে। এগুলো বিবেচনা করে আপনি আপনার সুবিধা মতো একটি কার্ড বাছাই করে নিতে পারেন।

আরো জানুন- ডেভিড কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে পার্থক্য

এটিএম কার্ড নিয়ে আরো পড়ুন

ADVERTISEMENT

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *