মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম

এক দেশ থেকে অন্য দেশে টাকা পাঠানো আজকের বিশ্বায়িত বিশ্বে একটি সাধারণ প্রয়োজন। আপনি যদি মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে চান, তাহলে আপনার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম সম্পর্কে আগে থেকেই জানা…

ADVERTISEMENT

এক দেশ থেকে অন্য দেশে টাকা পাঠানো আজকের বিশ্বায়িত বিশ্বে একটি সাধারণ প্রয়োজন। আপনি যদি মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে চান, তাহলে আপনার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম সম্পর্কে আগে থেকেই জানা থাকা উচিত। এই পোস্টে আমরা আপনাকে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে জানাবো।

বিদেশ বা মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর উপায়

  • ব্যাংক ট্রান্সফার
  • মানি ট্রান্সফার সার্ভিস
  • ইন্টারন্যাশনাল প্রিপেইড ডেবিট কার্ড

ব্যাংক ট্রান্সফার: আপনি আপনার মালয়েশিয়ান ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ওয়্যার ট্রান্সফারের মাধ্যমে বাংলাদেশের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করতে পারেন। এটি ব্যাংকের অনলাইন ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বা সরাসরি শাখায় গিয়ে করা যেতে পারে। আপনার ব্যাংকের নাম, শাখা, অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং SWIFT কোড সহ প্রাপকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেরও এসকল বিবরণ প্রয়োজন হবে এখানে।

মানি ট্রান্সফার সার্ভিস: বেশ কিছু কোম্পানি আছে যারা আন্তর্জাতিক ভাবে মানি ট্রান্সফার করে থাকে, যেমন ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রাম, রিয়া ইত্যাদি। এই সার্ভিস গুলোর মাধ্যমে আপনি দেশে সরাসরি প্রাপকের কাছে থাকা মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসে অথবা তার ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠাতে পারবেন। আপনার প্রাপকের নাম, একাউন্ট নাম্বার এবং তার আরো কিছু তথ্যের দরকার হতে পারে এখানে।

ইন্টারন্যাশনাল প্রিপেইড ডেবিট কার্ড: আপনি একটি ইন্টারন্যাশনাল প্রিপেইড ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে পারবেন। এই কার্ডগুলি আপনার মালয়েশিয়ান ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা লোড করে তারপর তা বাংলাদেশের এটিএম থেকে নগদ তোলার জন্য বা কেনাকাটার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

ADVERTISEMENT

আরো পড়ুন- রেমিটেন্স

মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম

ধাপ ১: একটি লেনদেনের মাধ্যম বাছাই করুন

মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর জন্য প্রথম কাজ হলো একটি বিশ্বস্ত মানি ট্রান্সফার সার্ভিস বেছে নেওয়া। লাইসেন্সপ্রাপ্ত এবং নিয়ন্ত্রিত রেমিট্যান্স প্রদানকারী এমন একটি প্রতিষ্ঠান খুজুন যেখানে একটি ভালো বিনিময় হার এবং লেনদেনে তুলনামূলক কম চার্জ সুবিধা অফার করে।

এরজন্য জনপ্রিয় অপশন গুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক, বিভিন্ন মানি ট্রান্সফার এজেন্সি এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম৷ এগুলোর মধ্যে ওই সময়ে সবচেয়ে ভালো অপশনটি খুজে পেতে আপনাকে একটু গবেষনা করতে হবে। ভালো বিনিময় হার এবং কম চার্জের কোনো মাধ্যম পেতে আপনার প্রয়োজনিয় ডকুমেন্টস এবং টাকা নিয়ে তাদের কাছে যান।

ADVERTISEMENT

ধাপ ২: টাকা পাঠাতে আপনার তথ্য দিন

অ্যান্টি মানি লন্ডারিং আইন মেনে চলতে আপনার এবং আপনার রিসিভারের কিছু তথ্য মানি ট্রান্সফার করার সময় সরবরাহ করতে হবে। এখানে আপনাকে একটি কেওয়াইসি ফর্ম করতে হবে। এটি হয়তো প্রতিষ্ঠান করে দিবে। আপনার কাজ হলো তাদের সঠিক তথ্য দেয়া।

এর সাথে আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট, ভিসার একটি কপি এবং ঠিকানার প্রমাণ অন্তর্ভুক্ত করতে হতে পারে। আপনার লেনদেন শুরু করার সময় এই নথিগুলি প্রস্তুত আছে কিনা তা নিশ্চিত করুন৷

ধাপ ৩: টাকা পাঠান এবং রিসিভার রিসিভ করেছে কিনা নিশ্চিত করুন

আপনার ফর্ম পূরণ এবং টাকা বুঝিয়ে দেয়ার পর মানি ট্রান্সফার এজেন্সিটি তা দেশে ট্রান্সফার করে দিবে। টাকা পাঠানোর মাধ্যমের উপর ভিত্তি করে তা হয়তো সাথে সাথে বা একটু সময় নিয়ে রিসিভারের একাউন্টে ঢুকতে পারে। মাধ্যম অনুযায়ি সময় নিয়ে অপেক্ষা করুন এবং নিশ্চিত হোন যে আপনার টাকা পৌছে গেছে।

ADVERTISEMENT

ধাপ ৪: লেনদেন সম্পন্ন করার পর রশিদ সংগ্রহ করুন

আপনি টাকা পাঠাতে ফর্ম পূরণ এবং টাকা জমা দেয়ার পর লেনদেন শেষ হলে ট্রান্সফার এজেন্সি আপনাকে একটি রশিদ দিবে। সেই রশিদ সংরক্ষণ করুন। কেননা কোনো সমস্যা হলে আপনি এই রশিদ দেখিয়ে সহযোগিতা পেতে পারেন। যেমন ধরুন আপনার টাকা যদি কোনো কারণে না যায় তবে তা আবার ফেরত চলে আসবে। তখন আপনার হয়তো এই রশিদ দরকার হবে।

টাকা ট্রান্সফারের মাধ্যম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যা বিবেচনা করবেন

লেনদেনের সীমা জানুন

আপনি কত টাকা পাঠাতে পারবেন সেই বিষয়ে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে। মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর জন্য লেনদেনের সীমা চেক করতে ভুলবেন না। বড় অঙ্কের জন্য, আপনাকে অতিরিক্ত ডকুমেন্টেশন প্রদান করতে হবে বা কঠোর কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।

বিনিময় হার এবং ফি

টাকা পাঠানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলির মধ্যে একটি হল বিনিময় হার এবং ফি বোঝা। টাকা হস্তান্তরকারীদের মধ্যে বিনিময় হারের ভিন্নতা হতে পারে। তাই আপনার টাকা ট্রান্সফার থেকে সর্বাধিক মূল্যটি পেতে হস্তান্তরকারীরদের বিনিময় হারের তুলনা করুন। সেই সাথে প্রযোজ্য হতে পারে এমন কোনো আলাদা ফি বা হিডেন চার্জ সম্পর্কে সচেতন থাকুন।

ট্যাক্সেশন এবং রিপোর্টিং

মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশ উভয় দেশেই টাকা পাঠানোর সময় আপনি আলাদা আলাদা ট্যাক্সের আন্ডারে পড়তে পারেন। তাই এব্যাপারে আগে থেকে জেনে নিন। এক্ষেত্রে আপনার হস্তান্তরকারীকে জিঙ্গেস করতে পারেন।

ADVERTISEMENT

রিসিভার জন্য ডকুমেন্টেশন

বাংলাদেশে প্রাপককে অর্থ গ্রহণের জন্য কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। সাধারণত প্রেরকের একটি মোবাইল নম্বর বা একটি বৈধ আইডি কার্ড, যেমন পাসপোর্ট দেখাতে হবে।

সঠিক স্থানান্তর পদ্ধতি নির্বাচন করুন

ব্যাংক ট্রান্সফার, ক্যাশ পিকআপ এবং মোবাইল ওয়ালেট ডিপোজিট সহ বিভিন্ন মানি ট্রান্সফার অপশন আছে। সবচেয়ে ভালো অপশনটি সিলেক্ট করার সময় প্রাপকের চাহিদা এবং পছন্দগুলি বিবেচনা করতে পারেন। নিশ্চিত করুন যে নির্বাচিত মাধ্যমটি বাংলাদেশে একটি সুবিধাজনক লেনদেনের অপশন।

শেষকথা

মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানো সহজ হবে যখন আপনি নিয়মগুলো প্রোপারলি বুঝতে পারেন। আপনার স্থানান্তর সম্পর্কিত যেকোনো প্রকার প্রশ্ন থাকলে সর্বদা পেশাদারদের সাথে পরামর্শ করুন।

ADVERTISEMENT

আমাদের অন্য রিলেটেড পোস্ট গুলো পড়ুন

১. দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
২. লন্ডন থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর উপায়
৩. আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
৪. বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
৫. ইতালি থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
ADVERTISEMENT

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *