বিকাশ থেকে রকেটে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম ছবিসহ
সম্প্রতি বিকাশ থেকে রকেটে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম চালু হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক চালু করা এই নতুন নিয়মটি জেনে নিন এই পোস্ট থেকে।
বিকাশ থেকে রকেটে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম বা মাধ্যম হলো বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক নিয়ন্ত্রিত বিনিময় একাউন্ট। এটি একটি নিরাপদ মাধ্যম, যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংক এটিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
গ্রাহকদের অনেকদিনের একটি চাওয়া ছিলো যে তারা যেন বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম গুলোর মধ্যে লেনদেন করতে পারে। বিশেষ করে কিভাবে বিকাশ থেকে রকেটে টাকা পাঠানো যায় বা bkash থেকে Nagad এ। যদিও নগদ কে এই সেবায় অন্তরভূক্ত করা হয় নি যখন আমি এই পোস্টি লিখছি।
এখন আসুন দেখে নেয়া যাক বিকাশ থেকে রকেটে টাকা পাঠানোর নিয়ম এবং রকেট থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম। সেই সাথে আরো জানবো এর জন্য কোনো ফি প্রযোজ্য হবে কিনা তা। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
Table of Contents
বিনিময় একাউন্ট কি?
বিনিময় একাউন্ট হলো ভারতের ইউনাইটেড পেমেন্ট ইন্টারফেসের (ইউপিআই) আদলে তৈরী বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন একটি সার্ভিস যা কিছু ব্যাংক এবং এমএফএস এর মাধ্যকার অর্থ লেনদেনের প্রকৃয়াকে সহজ করে। এখন কিছু সংখ্যক এই সেবার আওতায় আসলেও ধীরে ধীরে সকল ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এমএফএস ও পিএসপি এই সেবায় যুক্ত হবে।
যেভাবে বিকাশ থেকে রকেটে টাকা পাঠানো যায় বিনিময় দিয়ে
বিকাশ থেকে রকেটে টাকা বিনিময় একাউন্ট ব্যবহার করে পাঠানো যাবে। তবে তার আগে আপনাকে একটি বিনিময় একাউন্ট খুলে নিতে হবে।
বিকাশ বিনিময় একাউন্ট খোলা খুবই সহজ বিষয়। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমেই আপনি বিনিময় একাউন্ট খুলতে পারবেন। এটি একটি ই-মেইল একাউন্টের মতই। এই ই-মেইল একাউন্ট ব্যবহার করে সরাসরি বিনিময় টু বিনিময় অর্থ ট্রান্সফার করা যাবে। তবে এখানে ঝামেলার ব্যাপার হচ্ছে বিনিময় একাউন্ট খোলার জন্য ই-টিআইএন নম্বর লাগবে।
বিকাশ ও সোনালী ব্যাংকের মধ্যে লেনদেন এখন সহজ। এ সম্পর্কে আরো জানতে পড়ুন সোনালী ব্যাংক ও বিকাশে টাকা লেনদেন করার নিয়ম। আর বিনিময় দিয়ে ইসলামি ব্যাংকের সাথে লেনদেন করতে পড়ুন বিকাশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম। আরো পড়ুন বিকাশ থেকে নগদে টাকা ট্রান্সফার করা।
বিনিময় একাউন্ট খোলার নিয়ম
সচরাচর যে ব্যাংক বা এমএফএস সার্ভিস এই সিস্টেমের আওতায় আছে, তাদের এপের মধ্যে বা ওয়েব সাইটে বিনিময় একাউন্ট খোলার এবং লেনদেন করার অপশন পেয়ে যাবেন। এখানে আমি বিকাশ থেকে কিভাবে বিনিময় একাউন্ট করতে পারবেন তা আলোচনা করছি।
- বিকাশ এপ ওপেন করুন এবং একটু নিচের দিকে ”অন্যান্য সেবায়” বা “More Service” এ বিনিময় অপশন দেখতে পাবেন। না থাকলে এপটি আপডেট করলে আশা করি পেয়ে যাবেন।
- আপনার ইমেইল, পোস্টাল কোড, টিআইএন এবং ইউজার আইডি বানিয়ে সফলভাবে একাউন্টটি খুলে নিন।
- তারপর ৬ ডিজিটের পিন সেটআপ করে ”Submit Click” করুন।
- বিনিময় ইউজার আইডি খোলা হয়ে গেছে। আপনার প্রতিটা MFS অথবা ব্যাংক একাউন্ট এর জন্যে আলাদা আলাদা বিনিময় আইডি খুলতে হবে। এটি ইমেইল আইডি’র মত দেখতে হবে।
- এখন রকেটে ঢুকে একই ভাবে একটি বিনিময় একাউন্ট খুলে নিন। কারণ লেনদেন সাধারণত বিনিময় আইডি টু বিনিময় আইডি হয়ে থাকে।
একনজরে বিনিময় একাউন্ট খুলতে যা যা লাগবে
১. ই-মেইল |
২. পোস্টাল কোড |
৩. টিআইএন |
বিকাশ থেকে রকেটে টাকা ট্রান্সফার (bkash to Rocket)
- বিকাশে আবার বিনিময় অপশনে চলে আসুন।
- এখানে ”Direct Pay” তে ক্লিক করুন। তারপর এমাউন্ট, রেফারেন্স দিয়ে যে একাউন্টে সেন্ড করবেন সেই বিনিময় আইডি দিয়ে, পিন দিয়ে কনফার্ম করুন। রকেটে পাঠাতে রকেটের বিনিময় আইডি ব্যবহার করবেন।
- বিকাশ লেনদেন হয়ে গেলে লেনদেন সম্পর্কিত তথ্য বা স্টেটম্যান্ট দেখতে পারবেন।
আপনার টাকা ট্রান্সফার দেয়ার পর বিকাশ একাউন্ট চেক করে নিন।
আরো পড়ুন- ভিসা কার্ড থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম |
রকেট থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম (Rocket to bkash)
রকেট থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়মও একই, যেমনটা উপরে বিকাশ থেকে রকেটে পাঠানোর ব্যাপারে বলা হয়েছে। রকেট থেকে বিনিময় একাউন্ট খুলতে পারবেন তাদের এপ ব্যবহার করে নিচে দেখানো নিয়মে। বিনিময় একাউন্ট খুলা হলে তার মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতে পারবেন বিকাশ থেকে রকেটে বা রকেট থেকে বিকাশে।
রকেট থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর চার্জ
যদিও প্রথমে এটি ফ্রি ছিলো তবে এখন আপনাকে বিনিময়ের মাধ্যমে ট্রান্সফার করার জন্য একটি চার্জ দিতে হবে। রকেট এবং বিকাশ উভয় যেহেতু মোবাইল ব্যাংকিং বা (MFS) সার্ভিস, এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে লেনদেনে চার্জ হবে:
প্রদানকারী | গ্রহণকারী | ফি (%) | গ্রাহকের থেকে সর্বোচ্চ সার্ভিস চার্জ |
---|---|---|---|
মোবাইল ব্যাংক (MFS) | মোবাইল ব্যাংক (MFS) | ০.৭৫ | ০.৫০ |
আরো যেসকল মাধ্যমগুলোর মধ্যে এভাবে লেনদেন করতে পারবেন
আপাতত সোনালী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, আল–আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও ডাচ্–বাংলা ব্যাংক এ সেবায় যুক্ত হয়েছে। আর এমএফএসে হিসেবে থাকছে বিকাশ ও রকেট। ধীরে ধীরে সব ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এমএফএস ও পিএসপি এই সেবায় যুক্ত হবে।
শেষ কথা
এতো দিন এমএফএস গুলোর মধ্যে লেনদেন করার জন্য সরাসরি কোনো মাধ্যম ছিলো না। তবে বিনিময় মাধ্যম চালুর পর এখন গ্রাহকরা এই অতি প্রয়োজনিয় সুবিধাটি এখন উপভোগ করতে পারবে।
এখানে আপনি বিকাশ থেকে রকেটে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন। এই লেনদেনের জন্য আপনাকে আলাদা কোনো ফি দিতে হবে না।
এভাবে লেনদেন করার জন্য আপনাকে বিনিময় একাউন্ট তৈরী করে নিতে হবে। বিনিময় একাউন্ট করতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আপনার ই-টিন থাকতে হবে। এটি ছাড়া আপনি এই সেবা উপভোগ করতে পারবেন না।
বিকাশ সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করুন bkash
বিকাশের অন্যান্য পোস্টগুলো পড়ুন
এজেন্ট একাউন্ট | বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম |
মার্চেন্ট একাউন্ট | বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম |
রিটেইল একাউন্ট | বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট |
রেমিটেন্স | বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম |
রেমিটেন্স | আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম |
বিল পে | বিকাশে বিদ্যুৎ বিল দেয়ার নিয়ম |
নাম্বার পরিবর্তন | বিকাশ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন |
হোম পেজে যেতে ক্লিক করুন bankline এ।