আপনার বিকাশ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় কি দেখুন

আপনার বিকাশ একাউন্ট হ্যাক হয়েছে? আসুন দেখে নেয়া যাক হ্যাক করার নিয়ম, অর্থাৎ কি কি কারণে আপনার একাউন্ট হ্যাক হচ্ছে এবং কিভাবে আপনি আপনার একাউন্ট ফিরে পাবেন তা।

ADVERTISEMENT

এখানে বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করার নিয়ম নিয়ে কথা বলা হয়েছে এবং আপনার বিকাশ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় কি তাও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে যাতে পুরো বিষয়টি আপনি সহজে বুঝতে পারেন।

সেই সাথে বিকাশ হ্যাকিং থেকে বাঁচতে আপনি কি কি সতর্কতা আগে থেকে নিতে পারেন তা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার প্রয়োজনিয় উত্তর খুজে পেতে সহযোগিতা করবে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

ADVERTISEMENT

বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করার নিয়ম কি?

বিকাশ একাউন্ট বিভিন্ন ভাবে হ্যাক করা হয়ে থাকে। যদিও সরাসরি হ্যাক করা হয়না, কারণ বিকাশের সিস্টেম অনেক হার্ড। তবে যেটা করা হয় তা হলো মানুষকে ধোকা দিয়ে তাদের একাউন্টের এক্সেস নেয়া হয়। এটাই মূলত বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করা বলা হয়ে থাকে।

এখানে আপনার বিকাশ একাউন্ট আসলে হ্যাক করার নিয়ম বলতে কি কি উপায়ে হ্যাক হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে মূলত। এর প্রধান উদ্দ্যেশ্য হলো মানুষের মধ্যে সতর্কতা তৈরি করা। কাউকে হ্যাকিং শেখানো কখনই আমাদের উদ্দ্যেশ্য নয়। চলুন তাহলে দেখে নেয়া যাক কি কি উপায়ে আপনার বিকাশ একাউন্ট হ্যাক হতে পারে।

ADVERTISEMENT

#১. ফিসিং করে: বিকাশের সিকিউরিটি সার্ভিস কিন্তু বেশ শক্ত। কেউ সহজে তা চাইলেই হ্যাক করে ফেলতে পারবে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যেটা হয়ে থাকে তা হলো ভিকটিম ফিসিং এর পাল্লায় পড়েন। যেকোনো ভাবে অপরাধী ভিকটিম থেকে পাসওয়ার্ড নিয়ে নেন। এরপর তার একাউন্টে প্রবেশ করে সেখানে থাকা সকল অর্থ অন্য কোথাও সরিয়ে ফেলে।

এক্ষেত্রে যা হতে পারে, ভিকটিমের কাছে তার ডিভাইসে কোনো একটি লোভনিয় অফার আসে। যেখানে বলা হয় যে কোনো একটি স্টেপ নিলে তিনি আকর্ষনিয় পুরষ্কার জিতে নিবেন। এভাবে তাকে ফাঁদে ফেলে কোনো এক সময় তার পাসওয়ার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয় অপরাধী।

#২. পুরষ্কারের লোভ দেখিয়ে: অনেক সময় বলা হয় যে আপনি কোনো একটি লটারি জিতেছেন বা আপনি উপবৃত্তির টাকা পাচ্ছেন। আপনাকে টাকা পাঠানোর জন্য কিছু তথ্য লাগবে। মানুষ তখন অতি উৎসাহি হয়েও অনেক তথ্য দিয়ে দেন।

ADVERTISEMENT

এভাবে পাসওয়ার্ড, বিকাশ একাউন্ট নাম্বার, বা তার ভোটার কার্ডের কিছু তথ্য বেহাত হয়ে যায়। আর এভাবে অপরাধী তার শিকারের একাউন্টের টাকা দ্রুত সরিয়ে ভিকটিমকে সর্বশান্ত করেন।

#৩. মিথ্যে ভয় দেখিয়ে: কখন আবার ভিকটিমকে কল করে বলা হয় যে, ”আপনার একাউন্ট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তা ঠিক করে দেয়ার জন্য আমাদের প্রয়োজনিয় তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন“। এতে হয় কি ভিকটিম বেশিরভাগ সময়ে ভয় পেয়ে যায়। হয়তো তার একাউন্টে টাকা থাকার কারণে তা হারানোর ভয়ে তিনি ভালো খারাপ যাচাই না করে অপরাধীদের সাহায্য করতে শুরু করে দেন।

এখানে অপরাধী বিভিন্ন ভাবে এবং কোনো সংখ্যার সাথে অন্য কোনো সংখ্যা যোগ বিয়োগ করতে বলে সেখান থেকে তার পাসওয়ার্ড জেনে নেয়। ভিকটিমের মোবাইলে ওটিপি পাঠিয়ে সেই ওটিপি কালেক্ট করে তার একাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলে অথবা পাসওয়ার্ড নেয়ার পর পর ওটিপি নিয়ে একাউন্টে ঢুকে টাকা সরিয়ে ফেলে।

ADVERTISEMENT

আপনি কিন্তু আপনার বিকাশ একাউন্ট সচরাচর যে মোবাইলে ব্যবহার করেন, সে মোবাইল ছাড়া অন্য কোনো মোবাইলে আপনার বিকাশ সিম ছাড়াই বিকাশে লগইন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে শুধু লগইন করার সময় একটি ওটিপি চাইবে। বিকাশ ফ্রড যারা একাউন্ট হ্যাক করে তারা মূলত এ কাজটিই করে আপনার একাউন্টের এক্সেস নিয়ে থাকে।

এই পদ্ধতি দ্রুতই চলে, কেননা অপরাধী জানে যে ভিকটিম কে সময় দিলে তারা এই মিথ্যা তথ্য যাচাই করে তাদের ভন্ডামি ধরে ফেলতে পারে। তাই তারা ভিকটিমকে সময় দেয় না। যা করার তাড়াতাড়ি করতে বলে।

বিকাশ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয়

আপনি যদি বিকাশ একাউন্ট হ্যাকের শিকার হয়ে যান, তবে আপনার প্রদান কাজই হবে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে অভিযোগ করা। বিকাশের হেল্পলাইন নাম্বার  ১৬২৪৭ অথবা ০২-৫৫৬৬৩০০১ তে ফোন করে জানান যে আপনি আপনার একাউন্টে ঢুকতে পারছেন না, তা হ্যাক হয়ে গেছে অথবা আপনার টাকা চুরি করা হয়েছে বা হতে পারে। সেই সাথে তাদের রিকুয়েস্ট করতে পারেন যে আপনার বিকাশ একাউন্ট সাময়িক বন্ধ করে দিতে।

এটি যত দ্রুত আপনি তাদের জানাতে পারবেন, ততো বেশি সম্ভাবনা থাকে আপনার একাউন্টের চুরি যাওয়া টাকা ফিরে পাওয়ার। বিকাশ হয়তো ট্রান্সফার হওয়া টাকা কোন একাউন্টে ট্রান্সফার হয়েছে, সে অনুযায়ি দেখে ব্যবস্থা নিতে পারবে। তবে টাকা যদি বের করে ফেলা হয় তবে তা হয়তো ফিরে পাওয়া আরো বেশি কষ্টসাধ্য হবে।

ADVERTISEMENT

এটা নিশ্চিত যে বিকাশ থেকে আপনার টাকা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি আপনি চাইলে আরেকটি কাজ করতে পারেন। সেটা হলো, আপনি 999 এ কল করে পুলিশকে এ ব্যাপারে জানাতে পারেন এবং আপরি একটি জিডি করতে পারেন। এতে করে পুলিশের কাছ থেকেও হয়তো আপনি আলাদা প্রয়োজনিয় সহযোগিতা পেতে পারেন।

এছাড়া বিকাশের পিন রিসেট বা বিকাশ পিন পরিবর্তন করা সম্ভব হলে তা করে নিন।

বিকাশ লাইভ চ্যাট সুবিধা

বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে যদি কল করার মতো অবস্থায় না থাকেন তবে আপনি তাদের লাইভ চ্যাট সুবিধা নিতে পারেন। এই লাইভ চ্যাট সুবিধা পাওয়া যাবে তাদের ওয়েবসাইট, মোবাইল এপ, এবং তাদের ফেসবুক পেজেও। এছাড়া আপনি এই বিকাশ লিংকে ক্লিক করেও তাদের সাথে চ্যাট করার অপশনে চলে যেতে পারবেন।

ADVERTISEMENT

তাদের জানানোর মাধ্যমে আপনার একাউন্টি সাময়িক বন্ধ করিয়ে নিতে পারেন যাতে করে সবরকম ট্রান্জেকশন আপাদত বন্ধ থাকে। পরবর্তিতে সাময়িক বন্ধ বিকাশ একাউন্ট পূনরায় চালু করতে পড়ুন বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হলে করনীয়

হ্যাকাররা নাম্বার কোথায় পায়?

  • আপনার নাম্বার হয়তো সে আন্দাজ করে কল করে।
  • আবার হয়তো কোনো বিকাশ দোকানের লেনদেন খাতা থেকে আপনার নাম্বার সংগ্রহ করেছে।
  • এছাড়া আপনার কোনো আত্মিয়ও এমন কাজের সাথে জরিত থাকতে পারে।

বিশেষ করে প্রবাশিদের পরিবার কেও তারা টার্গেট করে। কেননা তাদের ফেমেলি মেম্বাররা তাদের বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠিয়ে থাকে।

বিকাশ একাউন্ট হ্যাকিং থেকে বাচঁতে করনীয়

বিকাশ একাউন্ট যদি সুরক্ষিত রাখতে চান তবে আপনার কিছু সতর্কতা সব সময় মেনে চলা উচিত। এই পূর্ব সতর্কতা হিসেবে আপনি যেসকল বিষয় অবশ্যই মেনে চলবেন তা হলো:

  • একাউন্টে পাসওয়ার্ড হিসেবে সবসময় স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
  • পাসওয়ার্ড সবসময় গোপন রাখুন এবং কেউ কখন জিঙ্গেস করলে কোনো ভাবেই তা বলবেন না।
  • কেউ যদি আপনার কাছ থেকে ওটিপি জানতে চায় তবে তা কখনই দিবেন না।
  • আপনার বার্থ ডেট এবং এনআইডি নাম্বার খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কখন কাওকে দিবেন না।
  • কোনো অচেনা ব্যক্তি যদি ফোন দিয়ে বলে যে আপনি কোনো লটারি জিতেছেন বা আপনাকে উপবৃত্তির টাকা পাঠাবে বা অন্য কোনো লোভ দেখায় কিংবা আপনাকে বলে যে আপনি পাসওয়ার্ড না দিলে আপনার একাউন্ট লক হয়ে যাবে, তাহলে ফোন কেটে বিকাশের কাস্টমার কেয়ার নাম্বারে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানিয়ে দিন।
  • এছাড়া সতর্কতা সরুপ টাকা বিকাশে না রেখে বিকাশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠিয়ে দিতে পারেন বা বিকাশে থেকে সোনালী ব্যাংকে পাঠিয়ে দিতে পারেন। পরে প্রয়োজনে আবার ব্যাংকের ভিসা কার্ড থেকে বিকাশে নিয়ে আসতে পারবেন।

আপনার সকল ধরণের একাউন্ট (বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট, বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট, বিকাশ পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট) এর সুরক্ষায় প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নিয়ে রাখুন আগে থেকেই।

শেষকথা

অসাধু ব্যাক্তিরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষ কে কল করে সচরাচর লোভ দেখিয়ে অথবা তাদের কোনো টাকা পাঠানোর কথা বলে তাদের কাছ থেকে মোবাইলে পাঠানো ওটিপি চায় এবং বিভিন্ন নাম্বার যোগ বিয়োগ করতে বলে তাদের পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয়।

আবার অনেক সময় ভয় দেখায় যে তারা যদি তাদের পাসওয়ার্ড না দেয় তবে তারা তাদের একাউন্ট হারাতে পারে। এভাবে বিভিন্ন কথা বলে তারা তাদের বিকাশ একাউন্টের এক্সেস নিয়ে টাকা থাকলে তা সরিয়ে ফেলে।

যাইহোক, কখনই আপনার পাসওয়ার্ড, মোবাইলে আসা ওটিপি, আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ড নাম্বার এগুলো কারো সাথে শেয়ার করবেন না। আর যেকোনো রকম সমস্যায় দ্রুত কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করুন।

তবে আপনার একাউন্ট যদি আপনার নামে না হয় তবে কিন্তু কাস্টমার কেয়ার আপনাকে সাহায্য করবে না। কেননা তারা আপনাকে আপনার একাউন্টের একাউন্টধারীর নাম এবং তার এনআইডি চাইতে পারে। তাই জেনে নিন বিকাশ একাউন্ট কার নামে

আরো পড়ুন- রকেটে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার নিয়ম

বিকাশের অন্যান্য পোস্ট গুলো পড়ুন

বিদ্যুৎ বিলবিকাশে বিদ্যুৎ বিল চেক ও পরিশোধ করার নিয়ম
বিকাশ টু নগদবিকাশ থেকে নগদে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম
বিকাশ টু রকেটবিকাশ থেকে রকেটে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম
নাম্বার পরিবর্তনবিকাশ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করার নিয়ম
বিকাশের অন্যান্য পোস্ট গুলো।

বিকাশের সকল পোস্টগুলো দেখতে bkash এ ক্লিক করুন। হোম পেজে যেতে ক্লিক করুন bankline এ।

ADVERTISEMENT

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *