বিদেশ থেকে অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
বিদেশ থেকে অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম খুজছেন? এখানে এবিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

বর্তমানে বিদেশ থেকে অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম খুব একটা কঠিন কিছু নয়। এখন এমন অনেক উপায় বের হয়েছে যার মাধ্যমে মানুষ সহজে বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠাতে পারেন তাদের প্রিয়জনের ব্যাংক একাউন্টে।
আজকের এই পোস্টে আমরা অগ্রণী ব্যাংকে রেমিটেন্স আনার নিয়মটি দেখবো। আরো দেখবো এখানে কি কি ডকুমেন্টস এর দরকার হয় এবং আর কোন কোন ব্যাংকে remittance আনা যায় তা। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
Table of Contents
বিদেশ থেকে অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
বিদেশ থেকে যদি আপনি অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাতে চান তবে আপনি বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে তা ট্রান্সফার করতে পারবেন, যেমন: বিদেশি ব্যাংক, বিভিন্ন মানি ট্রান্সফার এজেন্সি, ওয়েস্টার্ণ ইউনিয়ন, MoneyGram ইত্যাদি। তবে ভালো হবে মাধ্যম গুলোর মধ্যে পার্থক্য করে যটি সবচেয়ে ভালো হয়, অর্থাৎ ট্রান্সফার চার্জ, সার্ভিস, টাকার রেট প্রদান এই ক্ষেত্রগুলোতে যেটি ভালো মনে হয় সেটির সার্ভিস গ্রহণ করা ভালো। নিচে বিস্তারিত জানুন।
ধাপ ১. অর্থ হস্তান্তরের মাধ্যমগুলো সিলেক্ট করুন
বিদেশ থেকে বাংলাদেশে অগ্রণী ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তরের বিভিন্ন উপায় রয়েছে। আপনি চাইলে ব্যাংক ট্রান্সফার, অনলাইন মানি ট্রান্সফার পরিষেবা, ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন বা মানিগ্রামের মতো মাধ্যম গুলোর অর্থ স্থানান্তরের সার্ভিসগুলো ব্যবহার করতে পারেন৷ যেকোনো একটি সিলেক্ট করুন।
ধাপ ২. মাধ্যম গুলোর সার্ভিসের তুলনা করুন
আপনার পাওয়া মাধ্যম গুলোর ফি কেমন এবং এদের সার্ভিস কেমন তা আগে তুলনা করে নিন। এতে আপনি হয়তো সবচেয়ে সাশ্রয়ি অপশনটি খুজে পাবেন আপনার অর্থ হস্তান্তরের জন্য।
ধাপ ৩. মাধ্যম নির্বাচন হলে স্থানান্তর শুরু করুন
আপনার অপশন নির্বাচন এবং লেনদেন চার্জ ও সেবা সমূহ যাচাই করার পরে আপনি অর্থ স্থানান্তর শুরু করতে পারেন। সার্ভিস পেতে আপনাকে নির্দিষ্ট পয়েন্টে যেতে হতে পারে, অথবা তাদের অনলাইন সেবা নিয়ে সার্ভিস প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পারেন। হস্তান্তরের জন্য সার্ভিস প্রোভাইডার কে সঠিক তথ্য প্রদান নিশ্চিত করুন এবং তাদের দেয়া নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন।
অর্থ স্থানান্তরের প্রমাণ হিসাবে আপনাকে সার্ভিস প্রোভাইডার একটি লেনদেন নম্বর বা রসিদ প্রদান করতে পারেন। তা সংরক্ষণ করুন। এটি বিভিন্ন প্রয়োজনে কাজে লাগতে পারে। যেমন দেশে অর্থ গ্রহণ করা সময় দরকার হতে পারে বা পরে কোনো কারণে টাকা ফেরত নেয়ার দরকার হলে কাজে লাগবে।
আপনি যদি ওয়েস্টার্ণ ইউনিয়ন কে আপনার টাকা ট্রান্সফারের উপায় হিসেবে নির্বাচন করেন, তবে তাদের সার্ভিস সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে পড়ুন- ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন টাকা পাঠানোর নিয়ম এই পোস্টি। এখানে তাদের সার্ভিসের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আরো পড়ুন- পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম বাংলাদেশ থেকে
ব্যাংকে রেমিটেন্স পাঠাতে যা যা লাগবে
- অগ্রণী ব্যাংকের সুইফট কোড: AGNBBDDHXXX, আপনার ব্রাঞ্চের সুইফ্ট কোড নিশ্চত হয়ে নিন।
- ব্যাংকের ব্রাঞ্চের নাম।
- অগ্রণী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বর: আপনার প্রাপকের অ্যাকাউন্ট নম্বর।
- প্রাপকের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার।
- স্থানান্তরের উদ্দেশ্য।
অগ্রণী ব্যাংকের সুইফট কোড এবং ব্রাঞ্চের নাম
সুইফ্ট কোড জানার জন্য আপনি আপনার ব্যাংকে যেতে পারেন। ব্যাংকে গেলে তারা আপনাকে আপনার ব্রাঞ্চের সুইফট কোড জানিয়ে দিবে। সেই সাথে ব্যাংকে ব্রাঞ্চের নামও জানতে পারবেন বা কোনো এরিয়াতে এটি আছে তা জানলে আপনি ব্রাঞ্চের নাম জানতে পারবেন।
আবার ইন্টারনেটে সার্চ করলেও আপনি আপনার ব্রাঞ্চের সুইফ্ট কোড পেয়ে যাবেন। গুগলে লিখে সার্চ করুন “What is the swift code of Agrani bank Baraichari Branch” বা আপনার ব্রাঞ্চের নাম। লিখে সার্চ করলে গুগল আপনাকে সুইফট কোড জানিয়ে দিবে।
অগ্রণী ব্যাংকের সুইফট কোড সাধারণত AGNBBDDHXXX এমন কিছু একটি হতে পারে। এটি ব্র্যাঞ্চ ভেদে ভিন্ন হয়। তাই আপনার ব্রাঞ্চের সুইফট কোড কি তা জেনে নিন সার্চ করে বা ব্যাংকে ভিজিট করার মাধ্যমে।
অগ্রণী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বর
রিসিভারের একটি ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার দরকার হবে। কেননা যদি রিসিভারের কোনো অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট নাই থাকে তবে তিনি কিভাবে বিদেশ থেকে টাকা গ্রহণ করবেন? তাই যদি রিসিভারের কোনো ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার না থাকে তবে নিচের ডকুমেন্টস গুলো নিয়ে অগ্রণী ব্যাংকে গিলে ব্যাংক একটি একাউন্ট খুলে দিবে।
- আবেদনকারীর NID Card কপি / ড্রাইভিং লাইসেন্স / পাসপোর্ট (যেকোনো একটি ডকুমেন্টের কপি)।
- তার ইউটিলিটি বিলের কপি ( প্রমাণসহ, যেমন: বিদ্যুৎ বিল কপি, বা ওয়াসার বিল )।
- আবেদনকারীর টিন সার্টিফিকেট ( যদি থাকে )।
- আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি রঙিন ছবি।
- যাকে নমিনি করবেন তার এক কপি ছবি (পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি)।
প্রাপকের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার
রিসিভারের নাম ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার দরকার হতে পারে। এখানে নাম দিতে হবে যে নাম রিসিভারে এনআইডি কার্ডে ব্যবহার করা হয়েছে এবং সেই সাথে ব্যাংক একাউন্ট খুলতেও ব্যবহার করা হয়েছে সেই নাম। সেই সেই সাথে ঠিকানা এবং মোবাইল নাম্বারও মিল থাকতে হবে।
এগুলো ছাড়াও আপনার নির্বাচিত মাধ্যম অনুযায়ি আরো কিছু তথ্য দরকার হতেও পারে। তবে এসকল জিনিস গুলো কমন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এগুলো দিয়েই হয়ে যায়।
তবে আরো কি কি লাগতে পারে তা জানার জন্য আপনার নির্বাচিত মাধ্যমের কোনো ওয়েবসাইট থাকলে ভিজিট করে বা তাদের কাস্টমার কেয়ারের নাম্বার দেয়া থাকলে সেখানে কল করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
স্থানান্তরের উদ্দেশ্য
আপনি যখন টাকা পাঠানোর জন্য এজেন্সিতে যাবেন তারা আপনাকে আপনার টাকা পাঠানোর উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইতে পারে। কেননা এটির রেকর্ড রাখার দরকার হতে পারে বা সেন্ডিং প্রসেসের এটিও একটি অংশ হতে পারে। আপনি আপনার টাকা পাঠানোর কারণ তাদের জানাতে পারেন। যেমন আপনি বলতে পারেন “ফ্যামিলি এক্সপেন্স”।
বিদেশ থেকে অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর খরচ
আপনি যদি বিদেশ থেকে অগ্রণী ব্যাংকে সরাসরি টাকা পাঠান তবে এর জন্য অগ্রণী ব্যাংক আপনার কাছ থেকে কোনো টাকা কাটবে না। তবে হ্যাঁ, আপনি অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠাতে যে মাধ্যম বা এক্সচেইন্জ হাউজ ব্যবহার করেছেন, তারা হয়তো তাদের নির্ধারিত চার্জ আপনার কাছ থেকে কেটে রেখে দিবে।
আরো পড়ুন- বৈধ ভাবে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর সুবিধা
আপনি যদি বিদেশ থেকে অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠান তবে আপনি কিছু সুবিধা পাবেন। সুবিধা গুলো কি কি আসুন তা দেখে নেয়া যাক।
- অগ্রণী ব্যাংক আপনাকে বৈধ পথে রেমিটেন্স আনার সুবিধা দিচ্ছে।
- এই মাধ্যমে আপনি সহজে এবং দ্রুত আপনার টাকা দেশে পাঠাতে পারবেন।
- দেশে পাঠানো টাকার সাথে আপনি সরকার ঘোষিত ২.৫% প্রনোদনা পাবেন, ইত্যাদি।
বিদেশ থেকে আরো যেসকল ব্যাংকে টাকা পাঠানো যাবে
বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠানো এখন কঠিন কোনো ব্যাপার নয়। অগ্রণী ব্যাংক ছাড়াও আপনি দেশেও অন্যান্য ব্যাংকেও টাকা আনতে পারবেন। এর মধ্যে কয়েকটি হলো:
সোনালী ব্যাংকে | বিদেশ থেকে সোনালী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম |
ডাচ বাংলায় | বিদেশ থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম |
ইসলামী ব্যাংকে | বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম |
বড় কথা হলো, এখানে ব্যাংকের মাধ্যমে আপনার টাকা সেইফলি দেশে পৌছে যাবে। যদিও আরো বেশ কিছু লেনদেনের মাধ্যম আছে, যাদের মধ্যে সেইফ নয় এমনও আছে। তাদের মধ্যে একটি হলো হুন্ডি। হুন্ডি সম্পর্কে আরো জানতে পড়তে পারেন হুন্ডি কি, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানো যায় কিভাবে।
শেষকথা
আপনি যেকোনো দেশ থেকে বাংলাদেশে অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠাতে পারেন খুব সহজেই। তাই প্রথমে নির্বাচন করুন আপনি যেখানে আছেন সেখান থেকে টাকা ট্রান্সফার দেয়ার জন্য কোন মাধ্যমটি সুবিধাজনক। তারপর প্রয়োজনিয় কাগজপত্র এবং আপনার টাকা নিয়ে সেখানে যান। তারপর তারা আপনাকে কি করতে হবে তা নির্দেশনা দিবে ও সাহায্য করবে।
ব্যাংকে টাকা পাঠানো নিরাপদ ও বৈধ একটি উপায়। তাই অবৈধ ও ঝুকিপূর্ণ উপায় বাদ দিয়ে আপনার জন্য ভালো হবে অগ্রণী ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার করা। ব্যাংকিং চ্যানেলে ট্রান্সফার করলে আপনি এক্সট্রা বোনাসও পাবেন।
অগ্রণী ব্যাংকের সুইফট কোড কত?
সুইফ্ট কোড জানার জন্য আপনি আপনার ব্যাংকে যেতে পারেন অথবা ইন্টারনেটে সার্চ করলেও আপনি আপনার ব্রাঞ্চের সুইফ্ট কোড পেয়ে যাবেন। এটি AGNBBDDHXXX এমন কিছু হতে পারে। এটি ব্র্যাঞ্চ ভেদে ভিন্ন হয়।
বিদেশ থেকে অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর খরচ কতো?
বিদেশ থেকে আপনি অগ্রণী ব্যাংকে ফ্রিতে টাকা পাঠাতে পারবেন। এর জন্য কোনো টাকা কাটবে না।
অগ্রণী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর সুবিধা কি?
এই মাধ্যমে আপনি সহজে এবং দ্রুত আপনার টাকা দেশে পাঠাতে পারবেন এবং দেশে পাঠানো টাকার সাথে আপনি সরকার ঘোষিত ২.৫% প্রনোদনা পাবেন।
বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর নিয়ম নিয়ে আরো পড়ুন
- ইতালি থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
- লন্ডন থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর উপায়
- দুবাই থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
- ইন্ডিয়া থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম
- পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর উপায়
ক্যাটাগরিতে যান | Remittance |
হোমে যান | bankline |