টাকা পে কার্ড কি, কোথায় পাওয়া যাবে ও এর বিস্তারিত
প্রতি বছর অনেক মানুষ চিকিৎসা, ভ্রমণসহ বিভিন্ন কাজে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অনেকে ভারতে যান। এ জন্য মার্কিন ডলার কিনে ভারতে গিয়ে রুপিতে রূপান্তর করতে হয় তাদের। এতে তাদের প্রায়ই বিনিময় হারে লোকসানে পড়তে হয়। এ অবস্থা উত্তরণে টাকা পে নামের ডেবিট কার্ড আনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সম্প্রতি চালু হওয়া টাকা পে ডেবিট কার্ড, যা সম্পূর্ণ দেশিয় একটি কার্ড। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা উপভোগ করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এটি ভারতেও ব্যবহার করতে পারবেন। এতে সবচেয়ে বড় যে সুবিধাটি হবে তা হলো কার্ড ইসু করা বা ভারত ভ্রমনেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে খরচ অনেকটা কমে আসবে।
যাই হোক, আজকের এই পোস্টে আমরা দেখবো টাকা পে কার্ড কি, এই টাকা পে কার্ড কোথায় পাওয়া যাবে, এর চার্জ এবং বিশেষ করে এর বেশ কিছু সুযোগ সবিধাও দেখে নিবো এখানে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
Table of Contents
টাকা পে কার্ড কি?
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব উদ্যোগে চালু হওয়া প্রথম কার্ড হচ্ছে ‘টাকা পে’ কার্ড। ১ নভেম্বর ২০২৩ বুধবার এই ডেবিট কার্ডের উদ্বোধন হয়। এটি হলো ভিসা, মাস্টারকার্ড ও অ্যামেক্সের মতো আন্তর্জাতিক কার্ড সেবার একটি দেশিয় বিকল্প।
এই সেবা পুরোপুরি দেশীয় ব্যবস্থাপনায় চলবে, তাই এতে খরচও কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। শুরুতে এটি ডেবিট কার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। পরে ভবিষ্যতে টাকা পে ক্রেডিট কার্ডও আসবে।
ভিসা, মাস্টারকার্ড ও অ্যামেক্সের মতো আন্তর্জাতিক সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব সিস্টেম আছে এবং তাদের কার্ডগুলো সারা বিশ্বেই গ্রহণযোগ্য। লেনদেন মধ্যস্থতা করার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাও তাদের আছে।
তবে টাকা পে কার্ডের লেনদেন নিষ্পত্তি হবে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ অব বাংলাদেশ (এনপিএসবি) এর মাধ্যমে। এখন এক ব্যাংকের গ্রাহক অন্য ব্যাংকের এটিএম থেকে টাকা তুলতে গেলে এই এনপিএসবি সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন।
আপাতত দেশের মধ্যেই চালু হয়েছে এই সেবা। ভবিষ্যতে টাকা পে কার্ড ভারতেও ব্যবহার করা যাবে বলে জানা গেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তার কাছ থেকে।
টাকা পে কার্ডের সুবিধা
টাকা পে কার্ডে যেসকল বিশেষ সুবিধা এর গ্রাহকরা উপভোগ করতে পারবেন তা হলো:
- এক ব্যাংকের গ্রাহকরা অন্য ব্যাংকের এটিএম থেকে টাকা তুলতে পারবেন।
- এই কার্ডটি দেশের সমস্ত এটিএম, বিক্রয় পয়েন্ট এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করা যাবে।
- ডেবিট কার্ড হিসেবে পাওয়া যাবে।
- ইন্ডিয়া ভ্রমণের ক্ষেত্রে এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে এবং এটি কিছুটা খরচ কমাবে।
যেসব ব্যাংকে পাওয়া যাবে টাকা পে কার্ড
প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক, বেসরকারি খাতের দি সিটি ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক টাকা পে কার্ড সেবা চালু করছে। পরবর্তিতে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ব্যাংকেও এটি পাওয়া যাবে।
অন্যান্য ব্যাংক সহ সর্বোমোট আটটি ব্যাংক ধীরে ধীরে টাকা পে কার্ড চালু করবে। গ্রাহক সেবায় এগিয়ে থাকা ব্যাংক গুলোকে এটি চালু করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ব্যাংক গুলো হলো সোনালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইউসিবি ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক।
টাকা পে কার্ড চার্জ
টাকা পে কার্ডের চার্জ মূলত নির্ভর করবে ব্যাংকের উপর এবং কার্ডের ধরনের উপর। ব্যাংক ভেদে চার্জ হবে ভিন্ন। আর কার্ডের ধরন যেমন সিলভার কার্ড নাকি প্লাটিনাম কার্ড তার উপর ভিত্তি করে দামে পরিবর্তন থাকবে।
কার্ডের নিরাপত্তা
টাকা পে কার্ডের নিরাপত্তায় ব্যবহার করা হয়েছে ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ। তবে এখন সব ব্যাংকের কার্ডেই বাড়তি নিরাপত্তা সংবলিত নতুন ইএমভি প্রযুক্তি চালু হচ্ছে। ধীরে ধীরে টাকা পে কার্ডও ইএমভি প্রযুক্তি আনা হবে বলে জানা গেছে।
শেষকথা
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিকভাবে ব্যাংকগুলো পাইলট ভিত্তিতে টাকা পে কার্ড চালু করবে। ফ্রান্সের পরামর্শ প্রতিষ্ঠান ‘ফাইম’ এই কার্ডটি তৈরি করেছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ অনেকাংশে কমে আসবে। কারণ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সেবা মাশুল বাবদ অনেক অর্থ খরচ করতে হয় আমাদের।
আরো পড়ুন: চালু হলো ডিবিবিএল প্রিপেইড কার্ড নারী, শিক্ষার্থী ও ভ্রমণকারীদের জন্য