নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম ও সুবিধা অসুবিধা

নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম ও সুবিধা অসুবিধা গুলো জেনে নিন।

ADVERTISEMENT

Nagad Uddokta Account উদ্দ্যোক্তাদের জন্য একটি বিশেষ একাউন্ট। এটির মাধ্যমে অনেক বেকার তাদের কর্মসংস্থান করার সুযোগ পেয়েছে। এখান থেকে অনেকে অনেক ভালো ইনকামও করছে।

যাই হোক আজকের এই পোস্টে নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম ও প্রয়োজনিয় ডকুমেন্টস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সেই সাথে নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট এর সুবিধা অসুবিধা কি, এখানে আপনার কি পরিমাণ বিনিয়োগ করা উচিৎ, বা কি পরিমাণ মুনাফা পেতে পারেন এমন সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

ADVERTISEMENT

এই পোস্ট থেকে নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। সেই সাথে আপনার কিছু সম্ভাব্য প্রশ্নের উত্তর শেষে যুক্ত করে দিবো। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

নগদ উদ্দোক্তা একাউন্টের সুবিধা

নগদ উদ্দোক্তা একাউন্টের অনেক রকম সুবিধা আছে। বিশেষ করে ব্যবসায়িদের জন্য এটি লাভজনক হতে পারে। আসুন এর সুবিধা গুলো দেখে নেয়া যাক।

ADVERTISEMENT
  • যেকোনো ব্যবসার পাশাপাশি করা যায়।
  • এর জন্য আলাদা করে দোকান দেয়ার প্রয়োজন হয়না।
  • এক্সট্রা ইনকাম করার জন্য এই ব্যবসা করা যায়।
  • এটি একটি সিকিউর ওয়ে হওয়ায় কাস্টমার পাওয়া সহজ।
  • লেনদেনের পরিমান নির্দিষ্ট লিমিটের বেশি হলে কিছু এক্সট্রা সুবিধা পাওয়া যায়।

নগদ উদ্দোক্তা একাউন্টের অসুবিধা

যদিও এর ব্যবহারকারীদের জন্য বেশ কিছু সুবিধা আছে। কিন্তু এর কিছু অসুবিধাও আছে। আসুন কিছু অসুবিধা দেখে নেয়া যাক।

  • যেকেউ চাইলেই এই নগদ উদ্দোক্তা একাউন্ট খোলার সুযোগ পায় না।
  • এর জন্য একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকা লাগবে, আর কিছু ডকুমেন্টস থাকা লাগবে।
  • একাউন্টের টাকা উঠাতে আপনাকে ব্যাংকে যেতে হবে।

একাউন্ট খুলতে যা যা লাগবে

নগদ উদ্দোক্তা একাউন্ট খুলতে হলে আপনার কিছু জিনিস থাকা দরকার। কিছু ডকুমেন্টস অবশ্যই আপনাকে সাথে রাখতে হবে একাউন্ট করার জন্য। এছাড়াও আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও দেখা হবে এখানে।

এই একাউন্ট করার জন্য আপনার কি কি ডকুমেন্টস থাকতে হবে এবং আরো কি কি দরকার তা নিচে পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হলো। চলুন তা দেখে নেয়া যাক।

ADVERTISEMENT
  • একটি দোকান থাকতে হবে: ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটি দোকান থাকতে হবে। যা মুটামুটি একটি জনবহুল এরিয়াতে অবস্থিত।
  • ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে: ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে।
  • টিন সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে): কিছু ক্ষেত্রে টিন সার্টিফিকেট দরকার হতে পারে।
  • আইডি কার্ড থাকতে হবে: এনআইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট এর কপি লাগবে।
  • ছবি লাগবে: আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে ৩ কপি।
  • একটি মোবাইল নাম্বার লাগবে: এমন একটি নাম্বার যোখানে আগে কোনো নগদ একাউন্ট খোলা হয়নি।

দোকান নেয়ার সঠিক স্থান

একটি ব্যবসায় ভালো করার জন্য এর অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দোকানের অবস্থান যদি হয় একটি জনবহুল স্থানে তাহলে ব্যবসা ভালো চলার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আর যদি তা হয় এমন একটি স্থানে, যেখানে মানুষ সহজে যায় না, তবে সেই ব্যবসা কতোদিন টিকবে তা সন্দেহ আছে।

এখন আসুন দেখে নেয়া যাক কোন কোন স্থানে ভালো ব্যবসা হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন কিছু স্থান। নিচে এমনই কিছু সম্ভাবনাময় স্থানের নাম দেয়া হলো।

  • সরকারি বেসরকারি অফিস আদালতের কাছে।
  • হসপিটাল বা ক্লিনিক এর কাছে।
  • মার্কেট বা বড় শপিংমল এরিয়াতে।
  • জনবহুল পয়েন্টগুলোতে।

ভালো ব্যবসা করার জন্য এধরণের স্থান গুলোকে আদর্শ হিসেবে ধরা হয়। কেননা এসকল স্থানে সবসময় মানুষের আনাগোনা থাকে। আর যেখানে মানুষ বেশি চলাচল করে, যেখানে ব্যবসা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

ADVERTISEMENT

ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স

আপনার ব্যবসাইক প্রতিষ্ঠানের একটি নাম আছে অবশ্যই। আর না থাকলে নাম ঠিক করে তার একটি ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করে নিতে হবে। এখানে আপনার এনআইডি কার্ডের নামের সাথে মিল রেখে হুবহু ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করতে হবে। আপনি এটি পেয়ে যাবেন ইউনিয়ন পরিষধে, পৌরসভায় বা সিটি কর্পোরেশনে যোগাযোগ করলেই।

তাছাড়াও এখন অনলাইনে তুলনামূলক সহজে ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করা যায়। সুতরাং ট্রেড লাইসেন্স পেতে এসকল জায়গায় আপনার ট্রেড লাইসেন্সের জন্য যোগাযোগ করুন অথবা অনলাইনে আবেদন করুন।

টিন সার্টিফিকেট

আপনি যদি একজন নিয়মিত করদাতা হয়ে থাকেন তবে আপনার একটি টিন সার্টিফিকেট থাকবে। আর যদি এর আগে কর দেয়া না হয়ে থাকে তবে এটি সংগ্রহ করার জন্য আপনার এনআইডি কার্ড দিয়ে এনবিআরের ওয়েব সাইট থেকে এটি সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।

মোবাইল নাম্বার সিলেকশন

এমন একটি সহজ নাম্বার সিলেক্ট করুন যেটি সহজ হবে মনে রাখতে। এতে করে কাস্টমার আপনার নাম্বার সহজে মনে রাখতে পারবে লেনদেন করার জন্য। আপনার জন্যই এটি ভালো হবে। কিন্তু এমন নাম্বার সিলেক্ট করুন যেন তাতে আগে কোনো নগদ একাউন্ট খোলা হয়নি।

ADVERTISEMENT

নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম

নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনিয় ডকুমেন্টস যেমন: ট্রেড লাইসেন্স, আইডি কার্ড ইত্যাদি সংগ্রহ করে, সেই সাথে দোকান নির্দিষ্ট করে আপনাকে উদ্যোক্তা একাউন্টের আবেদন করতে হবে। আবেদন করতে পারবেন নগদের কাস্টমার কেয়ার ভিজিট করে অথবা তাদের স্থানিয় এসআর এর সাথে যোগাযোগ করে তার সহযোগিতা নিতে পারেন।

প্রতিটি জেলায় নগদের কাস্টমার কেয়ার রয়েছে। নগদের কাস্টমার কেয়ার খুজে পেতে গুগল করতে পারেন, অথবা তাদের ডিস্ট্রিবিউটর লোকেশন থেকে তাদের অবস্থান জেনে নিতে পারেন।

আর এসআরের ক্ষেত্রে, মোটামোটি সব এরিয়াতে এসআররা ভ্রমণ করে থাকে। সেখানে তারা গেলে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তাদের আপনার সকল ডকুমেন্টস গুলো দিলে তারা আপনাকে একাউন্ট খোলার জন্য সহযোগিতা করবে।

ADVERTISEMENT

আর কখন যদি একাউন্ট হ্যাক হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে তবে নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় কি তা দেখে নিন যাতে সমস্যায় না পড়তে হয়।

নগদ ইসলামিক একাউন্ট খোলার নিয়ম

নগদ উদ্দ্যোক্তা ব্যবসায় বিনিয়োগের পরিমাণ

যদি নগদ উদ্দ্যোক্তা ব্যবসা শুরু করতে চান তবে আপনার বিনিয়োগ করা উচিত আপনার অবস্থান বিবেচনা করে। অর্থাৎ ধরুন আপনি গ্রামে আপনার ব্যবসা শুরু করেছেন, সেক্ষেত্রে বিনিয়োগ কম হবে শহরের ব্যবসার তুলনায়।

গ্রামে ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনি সর্বোনিন্ম ৩০,০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০,০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারেন, যেহেতু গ্রামে মানুষ কম, মুনাফাও কম, তাই বিনিয়োগও কম।

আবার শহরের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ একটু বেশি করতে হয়। কারণ সেখানে মানুষ বেশি। আবার সেখানে মুনাফাও কিন্তু সেখানে বেশি। শহরে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ১০০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে যতো বেশি করা যায়। অত্যন্ত জনবহুল এরিয়াগুলোতে মিনিমাম ২০০,০০০ বা ৩০০,০০০ টাকা দিয়ে শুরু করতে হবে।

এই ব্যবসায় সম্ভাব্য মুনাফার পরিমাণ

নগদে লেনদেনের সময় প্রতি লেনদেনে নগদ উদ্দ্যোক্তা কিছু মুনাফা লাভ করে থাকে। এক্ষেত্রে প্রতি হাজারে মুনাফা হয়ে থাকে ৪ টাকা ১০ পয়সা।

অন্য দিকে আছে গ্রাহকদের একাউন্ট খুলে দেয়ার জন্যও আছে এক্সট্রা মুনাফা লাভ করার সুযোগ। এখানে দিনে ৫০০ টাকা করে ইনকাম করতে পারলে মাসে মিনিমাম ১৫,০০০ টাকা ইনকাম করার সুযোগ এবং আরো বেশিও ইনকাম করার সুযোগ আছে। ভালো লোকেশনে হলে শুধু এর ইনকামেই মাসে আর অন্য কিছু করার দরকার হবে না।

আরো পড়ুন- বাটন মোবাইলে নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম

নগদ উদ্দ্যোক্তা একাউন্ট নিয়ে কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর

নগদ উদ্দ্যোক্তা একাউন্ট খুলতে কি দোকান থাকতে হবে?

হ্যাঁ, আপনার একটি দোকান থাকা বাধ্যতামূলক যদি আপনি নগদ উদ্দ্যোক্তা একাউন্ট খুলতে চান।

অন্য মোবাইল ব্যাংকিং এর এজেন্ট হলে কি নগদের এজেন্ট হওয়া যাবে?

আপনি ধরুন বিকাশেরও অলরেডি একজন এজেন্ট। তবে তাতে কোনো সমস্যা হবে না নগদের এজেন্ট হতে।

অন্য কোম্পানির এজেন্ট হওয়া সিমে কি নগদের এজেন্ট নেয়া যাবে?

আপনার যে সিমে অলরেডি বিকাশের বা রকেটের এজেন্ট নিয়েছেন, সেই সিমে নগদের এজেন্ট নিতে কোনো সমস্যা হবে না। একই সিমে আপনি তা নিতে পারবেন।

উদ্দ্যোক্তা একাউন্ট পরিচালনা করা যায় কোথা থেকে?

নগদের উদ্দ্যোক্তা একাউন্ট পরিচালনা করা যাবে ”নগদ উদ্দ্যোক্তা” এপ থেকে।

নগদের অন্য পোস্ট গুলো পড়ুন

১. নগদ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তন করার নিয়ম
২. নগদ একাউন্ট লক হলে করনীয়
৩. নগদ একাউন্টের পিন নাম্বার ভুলে গেলে করণীয়
৪. নগদে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার নিয়ম
৫. সেলফিন থেকে নগদে এড মানি করার নিয়ম
৬. নগদ থেকে রকেটে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম
৭. নগদ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার

হোম পেজে যেতে ক্লিক করুন bankline এ।

ADVERTISEMENT

Similar Posts

2 Comments

    1. জ্বি আপনি খুলতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *