আপনার নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় দেখুন

আপনার নগদ একাউন্ট কি হ্যাক হয়েছে? দেখে নিন হ্যাক হলে করনীয় কি তা।

ADVERTISEMENT

আমরা অনেক সময় মোবাইল ব্যাংকিং এর নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় কি তা হঠাৎ একাউন্ট হ্যাক হলে বুঝতে পারি না। এর ফলে একাউন্টে টাকা থাকলে তা হ্যাক করা সেই চোরের পকেটে চলে যায়।

তবে হয়তো সঠিক নিয়ম জানা থাকলে আমরা আমাদের একাউন্ট হ্যাক হওয়া থেকে বাচাঁতে পারবো বা হ্যাক হলেও আমাদের একাউন্টের এক্সেস দ্রুত ফিরে পাবো সেখানে থাকা টাকা আমাদের হাত ছাড়া হওয়ার আগেই।

ADVERTISEMENT

আজকের এই পোস্টে আমরা দেখবো নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয় তা। তবে তার আগে নিজেদের সতর্কতার জন্য একাউন্ট হ্যাক হওয়ার আগে আমাদের কি কি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত তাও দেখে নিবো। চলুন শুরু করা যাক।

নগদ একাউন্ট হ্যাক করার নিয়ম

নগদ একাউন্ট বিভিন্ন ভাবে হ্যাক করা হয়ে থাকে। যদিও সরাসরি হ্যাক করা হয়না, কারণ নগদের সিস্টেম অনেক হার্ড। তবে যেটা করা হয় তা হলো মানুষকে ধোকা দিয়ে তাদের নগদ একাউন্টের এক্সেস নেয়া হয়। এটাই মূলত নগদ একাউন্ট হ্যাক করা বলা হয়ে থাকে।

ADVERTISEMENT

এখানে আপনার নগদ একাউন্ট আসলে হ্যাক করার নিয়ম বলতে কি কি উপায়ে হ্যাক হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। এর প্রধান উদ্দ্যেশ্য হলো সতর্কতা তৈরি করা। কাউকে হ্যাকিং শেখানো আমাদের উদ্দ্যেশ্য নয়। চলুন দেখে নেয়া যাক কি কি উপায়ে আপনার নগদ একাউন্ট হ্যাক হতে পারে।

#১. ফিসিং করে: নগদের সিকিউরিটি সার্ভিস কিন্তু বেশ শক্ত। কেউ সহজে তা চাইলেই হ্যাক করতে পারবে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যেটা হয় তা হলো ভিকটিম ফিসিং এর শিকার হন। কোনো না কোনো ভাবে অপরাধী ভিকটিম থেকে পাসওয়ার্ড নিয়ে নেন। এরপর তার একাউন্টে থাকা সকল অর্থ অন্য কোথাও সরিয়ে নেন।

এক্ষেত্রে অনেক সময় হয় যে ভিকটিমের কাছে কোনো একটি লোভনিয় অফার আসে। যেখানে বলা থাকে কোনো একটি স্টেপ নিলে তিনি আকর্ষনিয় পুরষ্কার জিততে পারেন। এভাবে তাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে কোনো এক সময় তার পাসওয়ার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেন। এখানে সব কিছু চলে হয়তো ভিকটিমের মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে।

ADVERTISEMENT

#২. মিথ্যে ভয় দেখিয়ে: কখন কখন ভিকটিমকে কল করে বলা হয় যে, ”আপনার একাউন্ট নষ্ট হয়ে যাবে, তা ঠিক করে দেয়ার জন্য আমাদের প্রয়োজনিয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুন“। এতে হয় কি ভিকটিম ভয় পেয়ে যায়। হয়তো তার একাউন্টে টাকা থাকার কারণে তা হারানোর ভয়ে তিনি তথ্য যাচাই না করে অপরাধীদের সাহায্য করতে শুরু করেন।

অপরাধী বিভিন্ন ছলছাতুরি এবং কোনো সংখ্যার সাথে অন্য কোনো সংখ্যা যোগ বিয়োগ করে তারপর পাসওয়ার্ড জেনে নেয় বা ভিকটিমের মোবাইলে ওটিপি পাঠিয়ে সেই ওটিপি কালেক্ট করে তার একাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলে অথবা পাসওয়ার্ড নেয়ার পর পর ওটিপি নিয়ে একাউন্টে ঢুকে টাকা সরিয়ে ফেলে।

এই পদ্ধতি দ্রুতই চলে, কেননা অপরাধী জানে যে ভিকটিম কে সময় দিলে তারা এই মিথ্যা তথ্য যাচাই করে তাদের ভন্ডামি ধরে ফেলতে পারে।

ADVERTISEMENT

নগদ একাউন্ট হ্যাক হলে করণীয়

নগদ একাউন্ট হ্যাকের শিকার যদি আপনি হয়ে থাকেন, তবে আপনার প্রদান কাজ হবে যতো দ্রুত সম্ভব নগদের কাস্টমার কেয়ারে অভিযোগ জানানো। নগদের হেল্পলাইন নাম্বার ১৬১৬৭ বা ০৯৬০৯৬১৬১৬৭ তে ফোন করে বলুন যে আপনি আপনার একাউন্টে ঢুকতে পারছেন না বা তা হ্যাক হয়ে গেছে।

এক্ষেত্রে তারা আপনাকে হয়তো কিছু প্রশ্ন করতে পারে আপনার একাউন্ট ভেরিফাই করার জন্য। এখানে আপনাকে আপনার এনআইডি কার্ড নাম্বার বা জন্ম তারিখ বা আপনার বাবা মায়ের নাম জানতে চাইতে পারে। তাদের প্রশ্ন অনুযায়ি উত্তর দিন।

হেল্প লাইনে যত দ্রুত জানাতে পারবেন, ততো বেশি সম্ভাবনা থাকবে আপনার একাউন্টের খোয়া যাওয়া টাকা ফিরে পাওয়ার। নগদ হয়তো ট্রান্সফার হওয়া টাকা কোন কোন একাউন্টে ট্রান্সফার হচ্ছে, সে অনুযায়ি ব্যবস্থা নিতে পারবে। তবে তা যদি বের করে ফেলা হয় তবে তা হয়তো ফিরে পাওয়া আরো বেশি কষ্টকর হবে। তবে নগদ থেকে তা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।

অন্যদিকে আপনি চাইলে আরেকটি কাজ করতে পারেন। তা হলো, আপনি 999 এ কল করে পুলিশকে জানাতে পারেন এবং একটি জিডি করতে পারেন। এতে করে পুলিশের কাছ থেকেও হয়তো আপনি প্রয়োজনিয় সাহায্য পেতে পারেন।

ADVERTISEMENT

আসলে কোন সাহায্যটি দ্রুত কাজে লেগে যায় তা তো আর বলা যায় না। তাই দুটি অপশনই বেছে নিলে আপনি হয়তো উপকৃত হতেও পারেন।

নগদ একাউন্টের হ্যাকিং থেকে বাচঁতে করনীয়

আপনার নগদ একাউন্ট বা নগদ ইসলামিক একাউন্ট যদি সুরক্ষিত রাখতে চান তবে আপনার কিছু সতর্কতা আগে থেকেই মেনে চলা উচিত। পূর্ব সতর্কতা হিসেবে আপনি যেসকল বিষয় মেনে চলবেন তা হলো:

  • একাউন্টে পাসওয়ার্ড সহজ এবং আন্দাজ করা যায় এমন কিছু দিবেন না। যেমন ধরুন: 1234 বা আপনার নাম।
  • পাসওয়ার্ড সবসময় গোপন রাখবেন। কেউ কখন জিঙ্গেস করলে তা বলবেন না। হয়তো কখনো কেউ কল করে তা চাইতে পারে। ভুলেও তা বলবেন না।
  • কেউ যদি কখন আপনার কাছ থেকে ওটিপি জানতে চায় তবে তা কখনই দিবেন না। ওটিপি আপনার একাউন্ট ভেরিফাই বা এধরণের কাজে লেগে থাকে। তাই এব্যাপারে সাবধান থাকবেন।
  • সম্ভব হলে আপনার বার্থ ডেট এবং এনআইডি নাম্বার বেশি প্রয়োজন ছাড়া কাওকে দিবেন না। অনেক সময় অসত ব্যাক্তিরা এগুলো আপনাকে হয়রানি করতে ব্যবহার করতে পারে।
  • কোনো ব্যক্তি যদি ফোন দিয়ে বলে যে আপনি কোনো লটারি জিতেছেন বা আপনাকে উপবৃত্তি পাঠাবে বা এরকম কোনো লোভ দেখায় কিংবা আপনাকে বলে যে আপনি পাসওয়ার্ড না দিলে একাউন্ট লক করে দিবে, তাহলে ফোন কেটে নগদের কাস্টমার কেয়ার নাম্বার ১৬১৬৭ এখানে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানিয়ে দিন।
  • প্রয়োজনে নগদ থেকে সেলফিনে টাকা ট্রান্সফার করে রেখে দিতে পারেন। পরে যখন দরকার হবে শুধু তখন সেলফিন থেকে নগদে এড মানি করে নিবেন।
  • আপনার যদি সন্দেহ হয় যে আপনার পিন কেউ জানে, তবে নগদ একাউন্টের পিন পরিবর্তন করে নিন। এতে করে আপনার একাউন্ট কিছুটা সেভ থাকছে বলে ধরে নেয়া যায়।
আরো পড়ুন- নগদে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার নিয়ম

শেষকথা

অনেক অসাধু ব্যাক্তিরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যাক্তিকে কল করে সচরাচর লোভ দেখিয়ে বা তাদের কোনো টাকা পাঠানোর ব্যাপারে বলে তাদের কাছ থেকে ওটিপি চায় এবং বিভিন্ন নাম্বার যোগ বিয়োগ করতে বলে তাদের পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয়। আপনি বুঝতেও পারবেন না কিভাবে যোগ বিয়োগের কথা বলে আপনার পাসওয়ার্ড তারা নিয়ে নিবে।

ADVERTISEMENT

অনেক সময় ভয় দেখায় যে তারা যদি তাদের পাসওয়ার্ড না দেয় তবে তারা তাদের একাউন্ট হারাতে পারে। এভাবে বিভিন্ন কথা বলে তারা একাউন্টের এক্সেস নিয়ে টাকা থাকলে তা সরিয়ে ফেলে। কখনই তাদের এমন কথায় কান দিবেন না। নগদ কখনো আপনাকে কল করে বা অন্য কোনো উপায়ে আপনার কাছ থেকে আপনার পিন জানতে চাইবে না।

তাই, কখনই আপনার পাসওয়ার্ড, ওটিপি, আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ড নাম্বার এগুলো কারো সাথে শেয়ার করবেন না। আর যেকোনো সমস্যায় দ্রুত কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করুন।

নগদের অন্যান্য পোস্ট গুলো পড়ুন

বিকাশে ট্রান্সফারবিকাশ থেকে নগদে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম
রকেটে ট্রান্সফারনগদ থেকে রকেটে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম
যেখানে যেখানে টাকা ট্রান্সফার দেয়া যাবে।
উদ্দ্যোক্তা একাউন্টনগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম
একাউন্ট বন্ধনগদ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম
মালিকানা পরিবর্তননগদ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তন করার নিয়ম
পিন লকনগদ একাউন্ট লক হলে করনীয়
একাউন্ট খোলা, বন্ধ, এবং মালিকানা পরিবর্তন।

হোম পেজে যেতে ক্লিক করুন bankline এ।

ADVERTISEMENT

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *