জনতা ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম
আপনি কি জনতা ব্যাংকের একজন গ্রাহক? জনতা ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? এখানে এবিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
জনতা ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম কঠিন কিছু নয়। একটু বুঝে নিলে খুব সহজে আপনি আপনার ব্যাংক চেকটি লিখে ফেলতে পারবেন। তবে ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম মূল চেক লেখার আগে জেনে নেয়া উত্তম। কেননা চেক লিখার নিয়ম বুঝতে না পারলে প্রায় কাটা ছেড়া হয়ে যায়। আর ব্যাংক চেকে কাটা ছেড়া করা একদমই উচিৎ নয়।
আপনি যেন খুব সহজে জনতা ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম টি বুঝতে পারেন তাই এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এখানে চেকের ছবি সহ ব্যবহার করা হয়েছে এবং তা কিভাবে পূরণ করে তা দেখানো হয়েছে। তবে চেষ্টা করা হবে যেন এই পোস্টে একটি ভিডিও সংযুক্ত করে দেয়া যায়। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
Table of Contents
জনতা ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম সংক্ষেপে
জনতা ব্যাংকের চেক লিখার ক্ষেত্রে প্রয়োজনিয় কিছু সতর্কতা মেনে আপনি আপনার চেকটি লিখতে পারেন। চেক লেখার সময় যে জিনিস গুলো লিখবেন তা হলো, Date, কাকে পে করছেন তার নাম বা নিজে হলে নিজ, টাকার এমাউন্ট অংকে এবং কথায়, এবং আপনার Signature দিন। সবশেষে চেকের পেছনে আপনার দুটি সিগনেচার এবং আপনার মোবাইল নাম্বার দিয়ে দিন।
ব্যাংক চেক লেখার আগে প্রয়োজনিয় সতর্কতা
- লেখার জন্য সুবিধাজনক কোনো জায়গায় চলে যান।
- চেক লেখার ক্ষেত্রে যেকোনো একটি ভাষা বাংলা অথবা ইংরেজি ব্যবহার করুন।
- লিখার আগেই কি লিখবেন তা ঠিক করে নিন।
- কাটা ছেড়া একদমই করবেন না।
- যদি কোনোভাবে কাটা ছেড়া হয়েও যায় তবে চেষ্টা করবেন একটানে তা কেটে আশে পাশে সুন্দর করে লিখতে।
- প্রয়োজনে কমা (,) ব্যবহার করুন।
- টাকার পরিমাণ অংকে লিখলে (/-) চিহ্ন ব্যবহার করুন।
এসকল সতর্কতা আপনার মেনে চলা উচিত যেকোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা এরিয়ে চলতে। নয়তো হতে পারে আপনার চেকটি নিয়ম না মেনে লেখার কারণে বাতিল হয়ে গেছে। আবার চেকটি ফ্রডের শিকারও হতে পারে যদি ঠিক মতো সব ব্যবহার না করা হয়। তাই চেক লেখার ক্ষেত্রে সচেতন থাকুন।
জনতা ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম
আপনার জনতা ব্যাংক একাউন্ট থেকে যদি চেকের মাধ্যমে টাকা তুলতে চান তবে আপনাকে যা করতে হবে তা নিচে আমি বিস্তারিত তুলে ধরলাম। আর হ্যাঁ, এটা মনে রাখবেন যে যেকোনো একটি ভাষায় আপনি আপনার চেকটি পূরণ করবেন। বাংলা বা ইংরেজি মিক্স করে ফেলবেন না।
চেক যেভাবে পূরণ করবেন
#Date বা তারিখ দেয়ার নিয়ম: চেকের ডান পাশে একদম উপরে Date লিখা অপশনের পাশে কিছু খালি ঘর দেখতে পাওয়া যায়। একটু খেয়াল করলে দেখতে পাবেন সেখানে DD MM YYYY এভাবে লিখা আছে।
তারিখ দেয়ার জন্য এখানে DD তে টাকা যেদিন তুলবেন সেদিনের তারিখ, MM এ কত মাস চলছে তা, এবং YYYY তে চলমান বছর লিখতে হবে। উদাহরণ সরুপ 25 09 2023 এভাবে লিখতে পারবেন। বুঝতে সমস্যা হলে উপরে ছবির সাথে মিলিয়ে নিন। আশা করি বুঝে যাবেন।
#Pay to বা টাকা কাকে দিচ্ছেন: আপনার টাকা আপনি মূলত কাকে দিতে চাচ্ছেন তা লিখুন। ধরুন আপনি নিজের টাকা নিজে তুলছেন, তবে শুধু ”Self বা নিজ” লিখে দিলেই হবে। আর যদি এমন হয় যে আপনি আপনার পরিচিত কাউকে দিয়ে টাকা তুলাচ্ছেন বা আপনি তাকে টাকা দিয়েছেন, সে তা তুলে নিবে, তবে তার নাম উল্লেখ করতে হবে।
যেমন ধরুন আপনি রহিম কে টাকা দিয়েছেন। তবে Pay to দিবেন রহিম। আর নিজেই নিজের চেক দিয়ে তুলতে গেলে লিখুন ”নিজ বা Self” এভাবে।
#The sum of taka বা টাকার পরিমাণ: আপনার কাঙ্খিত টাকার পরিমাণটি কথায় লিখুন। বাংলা বা ইংলিশে যে কোনো একটি ভাষায় লিখুন কতো টাকা তুলতে চান তা। ধরুন আপনি দশ হাজার তুলতে চান। তবে লিখুন ”দশ হাজার টাকা মাত্র বা Ten thousand taka only”, এখানে মাত্র কথাটি অবশ্যই লিখবেন।
#TK বা টাকার পরিমাণ সংখ্যায়: The sum of taka এর পাশেই TK লিখা বক্সে আপনার টাকার পরিমাণ অংকে লিখতে হবে। ধরুন আপনি ১০,০০০ টাকা তুলতে চান। তবে লিখুন “১০,০০০/- বা 10,000/-”, যেখানে লিখার শেষে অবশ্যই (/-) এই চিন্হ দিয়ে দিবেন।
এটি দেয়ার কারণ হচ্ছে সতর্কতা। অর্থাৎ আপনি অপনার টাকার পরিমাণের শেষে যদি এই চিন্হ দেন, তবে কেউ আর চাইলেও সেখানে আরেকটি সংখ্যা বসানোর জায়গা পাবে না। এমন হতেও পারে যে কেউ আপনার বসানো টাকার পরিমানের সাথে আরেকটি সংখ্যা বসিয়ে জালিয়াতি করে বাড়তি টাকা তুলে নিবে। তাই সতর্কতা মেনে চলুন।
#Signature বা স্বাক্ষর: একদম শেষে ডান পাশে নিচে আপনার সিগনেচার দিন। যে স্বাক্ষর আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্ট খোলার সময় ব্যবহার করেছিলেন, সেই সিগনেচারটি ব্যবহার করুন।
সিগনেচার করার পর চেকের পিছনের সাইটে আরো দুটি সিগনেচার করুন। সেই সাথে আপনার মোবাইল নাম্বার যেটি আপনি ব্যাংকে দিয়েছেন, সেই মোবাইল নাম্বারটি লিখে দিন।
আপনার একাউন্ট থেকে টাকা তুলার পর আর কতো টাকা আছে তা চেক করতে পড়ুন জনতা ব্যাংক একাউন্ট চেক করার নিয়ম এই পোস্টি। এখানে আপনি অনলাইনে বা অফলাইনে কিভাবে একাউন্ট চেক করতে পারবেন তা দেখানো হয়েছে।
আরো পড়ুন- ব্যাংকের চেক বই হারিয়ে গেলে করণীয়
শেষকথা
চেক লেখার আগে উপরে উল্লেখিত সতর্কতা গুলো অবশ্যই মেনে চলবেন। চেকের মধ্যে থাকা গ্রাহকের অংশ, অর্থাৎ ছোট অংশটি, আপনি লিখুন বা না লিখুন কোনো সমস্যা নাই। তবে লিখাটা ভালো। ব্যাংকের অংশের মূল চেক যা উপরে উল্লেখ করেছি, তা সতর্কতার সহিত পূরণ করুন, যেন ভূল না হয়ে যায়।
কোথাও ভুল হলে সেখানে বার বার কলম ঘষার চেষ্টা একেবারেই করবেন না। চেষ্টা করুন একটানে তা কেটে আশে পাশে তা লিখে দিতে। সবচেয়ে ভালো হয় প্রথমেই সব ঠিক করে নিন যে কোথায় কি লিখবেন। এতে করে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়। আর যখন টাকার এমাউন্ট অংকে লিখবেন, তখন কমা দিতে ভুলবেন না।
প্রশ্ন এবং উত্তর
একটি চেক লিখে ফেলার পর থেকে তার ব্যাংকে পরবর্তি ছয় মাসের মধ্যে জমা করতে হয়। ছয় মাস পর আর এর মেয়াদ থাকে না। তখন এই চেকটি বাতিল বলে গন্য হয়।
সংখ্যাং যখন টাকার এমাউন্ট লেখা হয় তখন (/-) চিন্থ দেয়া হয় যাতে করে কেউ আর ওই সংখ্যার পাশে বাড়তি কোনো সংখ্যা না বসাতে পারে। অনেক সময় ফ্রড কারো হাতে চেক পড়লে তারা এই অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটাতে পারে।
আপনার চেকটি আপনি বাংলায়ও পূরণ করতে পারেন আবার চাইলে ইংলিশেও পূরণ করতে পারেন। এটি সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করবে। তবে আপনার উচিত হবে যে ভাষাই পূরণ করেন না কেন, যেকোনো একটি ভাষা ব্যবহার করবেন।
চেক লেখা নিয়ে অন্যান্য পোস্ট গুলো পড়ুন
সোনালী ব্যাংক চেক | সোনালী ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম |
ইসলামী ব্যাংক চেক | ইসলামী ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম |
রুপালী ব্যাংক চেক | রূপালী ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম |
ডাচ বাংলা ব্যাংক চেক | ডাচ বাংলা ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম |
অগ্রণী ব্যাংকের চেক | অগ্রণী ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম |
হোম পেজে যেতে ক্লিক করুন bankline এ।
Milon akon