ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে দেখে নিন
ব্যাংকে একটি একাউন্ট করবেন এই জন্য ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে তা জানতে চান? এই পোস্টে বিস্তারিত জেনে নিন।
কেউ একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলার চিন্তা করলে প্রথমেই তার মাথায় আসে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে। আপনিও হয়তো একই চিন্তা থেকে এই পোস্টে এসেছেন। আসলে এটি বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যা নির্দিষ্ট করে না বলে বিস্তারিত বললে আপনার বুঝতে সুবিধা হবে।
তাই আপনার সুবিধার্থে এই পোস্টে আমি আলোচনা করেছি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে, ব্যাংক একাউন্ট কি টাকা ছাড়া খুলা সম্ভব কিনা বা এরকম সব সম্পর্কিত প্রশ্ন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
Table of Contents
ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে?
আসলে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে উত্তরটি নির্দিষ্ট করে বলার মতো কিছু নয়। কারণ, বাংলাদেশে ব্যাংক আছে প্রায় ৬১ টি। এখানে এক এক ব্যাংকের নিতি এক এক রকম। আবার একাউন্টের ধরণ অনুযায়ি এই নিয়ম আবার আরেক রকম। তাই এক্ষেত্রে কিধরণের একাউন্ট খুলছেন তাও আপনার একাউন্ট খুলার এমাউন্টের উপর নির্ভর করে।
#১. স্টুডেন্ট একাউন্ট: আপনি যদি স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলার ব্যাপারে ভাবেন তবে আপনার জন্য সবচেয়ে কম টাকায় একাউন্ট খুলার সুবিধা আছে প্রায় সব ব্যাংকে। একটি স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে সর্বোনিন্ম ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকার মতো লাগতে পারে। স্টুডেন্টদের কথা বিবেচনা করে মূলত এই এমাউন্ট ঠিক করা হয়।
আরো পড়ুন- স্টুডেন্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
#২. সেভিংস একাউন্ট: সেভিংস একাউন্ট খুলার জন্য টাকা লাগে তুলনামূলক একটু বেশি। কোনো কোনো ব্যাংক সর্বোনিন্ম ৫০০ টাকা থেকে শুরু করলেও কারো ক্ষেত্রে তা ১০০০ টাকা হয়ে থাকে। এটি আসলে ব্যাংক অনুযায়ি ভিন্ন হয়ে থাকে।
#৩. কারেন্ট একাউন্ট: কারেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ব্যাংকের বিভিন্ন নিয়ম। তবে আপনি কোনো ব্যাংকে সর্বোনিন্ম ১০০০ টাকা দিয়েও একাউন্ট খুলতে পারবেন, যা কোনো কোনো ব্যাংকে আবার কয়েক হাজার টাকা হতে পারে।
আরো পড়ুন- যৌথ ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
একনজরে দেখুন ব্যাংক একাউন্ট খুলতে যতো টাকা লাগে
একাউন্টেন ধরণ | মিনিমাম প্রাইমারি ডিপোজিট |
---|---|
স্টুডেন্ট একাউন্ট | ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা |
সেভিংস একাউন্ট | ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা |
কারেন্ট একাউন্ট | ১০০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা |
টাকা ছাড়া ফ্রি একাউন্ট খোলার উপায়
যাদের হাতে এই মূহুর্তে টাকা নেই তারা হয়তো এতোক্ষণ ভাবছিলেন যে ব্যাংক একাউন্ট আর করা হবে না এখন। তবে আপনাদের জন্য আছে অলটারনেটিভ সলিউশন। টাকা ছাড়াও আপনি চাইলে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন।
বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা দিচ্ছে। এসকল ব্যাংকের ওয়েব সাইট ব্যবহার করে কিংবা তাদের এপ ব্যবহার করেই এখন অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলা সম্ভব। অনলাইনে এসকল ব্যাংক একাউন্ট খুলেই আপনি এই ব্যাংক একাউন্টি যেকোনো কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। এখানে আপনাকে কোনো টাকা ডিপোজিট করতে হবে না।
যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ইসলামী ব্যাংকের একাউন্ট খোলার নিয়ম। আপনি তাদের একাউন্ট খুবই সহজে বাসায় বসে থেকে সেলফিন এপ থেকে আপনার কিছু তথ্য সাবমিট করে একাউন্ট খোলার কাজ সম্পন্ন করে ফেলতে পারবেন। এখানে আপনাকে একদমই ব্যাংকে যেতে হবে না, কোনো প্রকার ডিপোজিট করতে হবে না।
এমন আরো কোন কোন ব্যাংকে করা সম্ভব তা জানতে আপনাকে কিছুটা সহযোগিতা করবে এই পোস্ট- অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম। ঘুরে আসুন এখানে দেয়া লিংক থেকে।
তবে আবার কিছু ব্যাংক আছে যেখানে অনলাইনে একাউন্ট খোলা সম্ভব হলেও আপনাকে ব্যাংকে যেতে হবে ডকুমেন্টস জমা এবং প্রাথমিক ডিপোজিট করতে। এক্ষেত্রে হয়তো আপনি টাকা ছাড়া একাউন্ট খোলার সুবিধা পাবেন না। যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যায় সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট খোলার নিয়ম।
আরো পড়ুন- জেনে নিন কোন ব্যাংকে টাকা রাখা নিরাপদ |
কারেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনিয় ডকুমেন্টস
কারেন্ট একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে যেসকল ডকুমেন্টস দরকার হবে তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
- গ্রাহকের এনআইডি কার্ড/ ড্রাইভিং লাইসেন্স বা অন্য কোনো পরিচয় পত্র।
- তার পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি।
- এড্রেস ভেরিফিকেশনের জন্য ইউটিলিটি বিলের কপি।
- ট্রেড লাইসেন্স কপি।
- টিন সার্টিফিকেটের কপি (যদি থাকে)।
- ১৫০০ টাকা ডিপোজিট।
সেভিংস একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনিয় ডকুমেন্টস
যেসকল জিনিস আপনার থাকতে হবে ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট খুলতে যাওয়ার আগেই এবং তা সাথে করে নিয়ে যেতে হবে তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
- অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্ম পূরন করতে হবে।
- অ্যাকাউন্টধারীর ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
- নমিনির ১ কপি ছবি লাগবে।
- জাতীয় পরিচয়পত্র/ পাসপোর্ট/ চেয়ারম্যান সার্টিফিকেটের মতো শনাক্তকরণ প্রমাণ লাগবে।
- প্রাথমিক জমা দিতে হবে টাকা ৫০০/- টাকা।
- এবং স্বাক্ষর লাগবে।
ফর্মটি পূরণ করলে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন ন্যাশানাল আইডি কার্ডের ফটোকপি, ছবি, নমিনির তথ্য ও আইডি এবং নমিনির ছবি সহ সমস্ত কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনিয় ডকুমেন্টস
- শিক্ষা প্রতিষ্টানের আইডি কার্ড।
- জন্ম নিবন্ধন বা এআইডি (যে কোনো একটি)।
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ফটো।
- নমিনির আইডি কার্ড।
- নমিনির পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ফটো।
জন্ম নিবন্ধন দিয়ে একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদটি অবশ্যই অনলাইন/ডিজিটাল হতে হবে।
শেষকথা
সচরাচর অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট করলে আপনার কোনো টাকা ব্যাংকে জমা রাখার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু আপনি যদি ব্যাংকে গিয়ে একাউন্ট করার কথা ভেবে থাকেন তবে আপনাকে আপনার একাউন্টে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা ডিপোজিট করতে হবে। সুতরাং ব্যাংক একাউন্ট খুলতে আপনার এই পরিমাণ টাকা লাগবে।
এই টাকা আপনি মূলত আপনার একাউন্টেই জমা রাখেন, ব্যাংক তা নিয়ে যায় না। ব্যাংক যা নেয় তা হলো, বছর শেষে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ চার্জ। ভবিষ্যতে আপনি যদি কখনো আপনার ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ করেন, তবে ব্যাংক আপনাকে এই টাকা ফেরত দিয়ে দিবে।
এখন আপনি যদি একটি ব্যাংক একাউন্ট করতে রেডি থাকেন, তবে আপনার প্রয়োজনিয় ডকুমেন্টস গুলো সাথে নিয়ে নিকটস্থ ব্যাংকের শাখায় যেতে পারেন। সেখানে গিয়ে যদি আপনার একাউন্ট করার ব্যাপারে বলেন তবে তারা আপনাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করবে একটি ব্যাংক একাউন্ট করার জন্য।
আরো পড়ুন- ফিক্সড ডিপোজিট করার জন্য কোন ব্যাংক সবচেয়ে ভাল
প্রশ্ন এবং উত্তর
হ্যাঁ, আপনি যদি সেভিংস একাউন্ট খুলতে যান, তবে যা লাগবে তার থেকে কারেন্ট একাউন্টে ভিন্ন হবে। তবে সবচেয়ে কম হয়ে থাকে স্টুডেন্ট একাউন্টে।
ব্যাংকিং নিয়ে আমাদের অন্য পোস্ট সমূহ পড়ুন
- অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট চেক করার নিয়ম
- ইসলামীক ব্যাংকিং ক্যাটাগরি
- ব্যাংক একাউন্ট ট্রান্সফার করার নিয়ম
- ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম
- এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
- নতুন চেক বইয়ের জন্য আবেদন করার নিয়ম