নতুন চেক বইয়ের জন্য আবেদন করার নিয়ম
আপনার চেক বইয়ের পাতা কি শেষ? কিভাবে নতুন চেকের জন্য আবেদন করবেন বুঝতে পারছেন না? এই পোস্টে এবিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
নতুন চেক বইয়ের জন্য আবেদন পত্র লিখা ছাড়াও একাধিক নিয়মে আপনার চেকের জন্য ব্যাংকে আবেদন করতে পারবেন। তবে ব্যাংক ভেদে সব ধরণের সুবিধা এভেইলএবল নাও থাকতে পারে। কোথাও হয়তো অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন, আবার কোথাও আবেদন লিখে চেকের আবেদন করতে হতে পারে।
যাই হোক, এই পোস্টে আমরা দেখবো নতুন চেক বইয়ের জন্য আবেদন পত্র লিখার নিয়ম এবং আর কোন কোন নিয়মে আপনি আপনার ব্যাংকে চেকের জন্য রিকুয়েস্ট করতে পারবেন সে নিয়ম গুলো। চলুন তবে শুরু করা যাক।
Table of Contents
নতুন চেক বইয়ের জন্য আবেদন করার নিয়ম গুলো
ব্যাংক ভেদে যে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম গুলোতে আপনি চেক বইয়ের জন্য আবেদন করতে পারেন তা হলো:
- চেক রিকুইজিশন স্লিপ ব্যবহার করে।
- ব্যাংকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফর্ম বা স্লিপ সংগ্রহ করে।
- ব্যাংক বরাবর দরখাস্ত লিখে।
- অনলাইনে আবেদনের অপশন থাকলে তা ব্যবহার করে।
এক এক ব্যাংকে এক এক নিয়মে আপনি চেকের জন্য দরখাস্ত করতে পারবেন। সব ব্যাংকে সব নিয়ম গুলো হয়তো চালু থাকবে না। আপনার ব্যাংক কোন নিয়মটি ফলো করে তা জেনে নিন।
চেক রিকুইজিশন স্লিপ
ব্যাংকের কাছ থেকে পাওয়া আগের চেক বইয়ের শেষের দিকে একটি চেক রিকুইজিশন স্লিপ দেখতে পাবেন। চেক শেষ হয়ে আসলে এই স্লিপটি পূরণ করে চেক থেকে আলাদা করে ব্যাংকে জমা দিলে ব্যাংক আপনাকে একটি নতুন চেক ইসু করে দিবে।
চেক রিকুইজিশন স্লিপের মাধ্যমে চেকের জন্য আবেদন করা খুবই সহজ। এই মাধ্যমে আপনাকে আলাদা করে আবেদন লিখতে বা কোনো প্রকার দরখাস্ত করতে হবে না। শুধু চেকের রিকুইজিশন স্লিপটি আপনি ব্যাংকে গিয়ে জমা দিলে তারা আপনাকে নতুন একটি চেক দিয়ে দিবে।
আরো পড়ুন- ব্যাংকের চেক বই হারিয়ে গেলে করণীয়
নির্দিষ্ট ফর্ম বা স্লিপ সংগ্রহ
যদি কোনো কারণে আপনার চেক রিকুইজিশন স্লিপটি নষ্ট হয়ে যায় বা হারিয়ে যায় তবে চিন্তার কিছু নেই। আপনি এক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে একটি নির্দিষ্ট ফর্ম বা স্লিপ সংগ্রহ করতে পারেন। তারপর তা পূরণ করে ব্যাংকে নতুন চেকের জন্য জমা করে দিন, ব্যাংক আপনাকে একটি চেক ইসু করে দিবে।
স্লিপটি পূরণ করার সময় সাবধানে আপনার তথ্য গুলো পূরণ করুন, যেন ভুল না হয়ে যায়। আপনি স্লিপটি জমা করার পর পরই তারা আপনার নতুন চেক রেডি করে দিবে।
ব্যাংক বরাবর চেকের দরখাস্ত
অনেক সময় কিছু ব্যাংক হয়তো উপরে উল্লেখিত ধরণের স্লিপ বা ফর্মের ব্যবস্থা নাও রাখতে পারে। তখন কোনো কোনো ব্যাংকে আপনাকে ব্যাংকের ম্যানেজার বরাবর একটি দরখাস্ত লিখতে হতে পারে। এটি আপনি আপনার ব্যাংকে গেলে সেখানে জিঙ্গেস করার মাধ্যমে জানতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনার নতুন চেকের জন্য আবেদনে আপনার একাউন্ট নাম্বার লেখার পাশাপাশি আপনার নাম, এড্রেস, ফোন নাম্বার এবং আপনার সিগনেচারও যুক্ত করে দিতে হবে। আপনি চাইলে আপনার দরখাস্ত বাংলায় বা ইংলিশে উভয় ভাষায় লিখতে পারেন, যেটি আপনার কাছে সুবিধাজনক মনে হয়। আপনার সুবিধার্থে নিচে এমনি দুটি দরখাস্ত তুলে ধরা হলো।
নতুন চেক বইয়ের জন্য আবেদন পত্র বাংলায়
তারিখ: ২৫/০১/২০২৩
বরাবর
ম্যানেজার
কখগ ব্যাংক
কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি
বিষয়: নতুন চেক বইয়ের জন্য আবেদন।মহাশয়,
সবিনয়ে নিবেদন এই যে, আমি মোঃ ওমর ছালেহীন, একাউন্ট নাম্বার 132465798000, আপনার ব্যাংকে একটি সঞ্চয়/কারেন্ট অ্যাকাউন্ট বজায় রেখেছি। এই একাউন্ট থেকে আমি নিয়মিত লেনদেন করি। তবে আমার পুরনো চেক বইয়ের পাতা শেষ হয়ে যাওয়ায় আমার লেনদেন করতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।
অতএব জনাবের নিকট আকুল আবেদন এই যে, আমাকে দ্রুত একটি নতুন চেক বই প্রদান করে উপকৃত করবেন।
নিবেদক
নাম: ওমর ছালেহীন
ঠিকানা: কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি
মোবাইল: 01800000000
ইংলিশে নতুন চেক বইয়ের জন্য আবেদন পত্র
Date: 25/01/2023
To
Manager
ABC Bank PLC
Kaptai, Rangamati
Sub: Requesting for issuing a new cheque book.Dear Sir,
I am Md. Omar Salehin, account number 132465798000, maintain a savings/current account in your bank. I do regular transactions from this account. But I am having some difficulty in making transactions as my old cheque book has run out of pages.
So an urgent request sir, kindly provide me with a new cheque book asap.
Sincerely Yours,
Name: Md. Omar Salehin
Address: Kaptai, Rangamati
Mobile: 01800000000
আরেকটি সেম্পল দেখুন নিচের ছবিতে।
অনলাইনে চেকের আবেদনের
কোনো কোনো ব্যাংক তাদের অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেমে চেকের জন্য আবেদন করার অপশন রাখে। আপনি আপনার ব্যাংকের অনলাইনে নির্দিষ্ট মেনুতে গিয়ে, চেক বই এর জন্য রিকোয়েস্ট করতে পারবেন।
ব্যাংকের অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেমের সাথে পরিচিত থাকলে সেখানে একটু খুজে দেখুন, অপশনটি পেয়ে যাবেন। পরিচিত না থাকলে উক্ত অনলাইন সিস্টেম সম্পর্কে গুগলে সার্চ করে জেনে নিতে পারেন। গুগল ছাড়াও এখন ইউটিউবে অনেক টিউটরিয়াল আছে যেখানে এগুলো নিয়ে অনেক কথা হয়ে থাকে।
তবে অন্যান্য নিয়মের তুলনায় অনলাইনে আবেদন করে চেকের জন্য রিকুয়েস্ট করা তুলনামূলক সহজ হতে পারে। কোনো কোনো ব্যাংক তো এই নিয়মে রিকুয়েস্ট পেলে তারা চেক বুক ইসু করে বাসার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়। যা তাদের গ্রাহকদের জন্য অবশ্যই একটি বিশেষ সুবিধা। এতে করে ব্যাংকের গিয়ে বা লাইনে দাড়িয়ে থেকে আর সময় নষ্ট করতে হয় না।
চেক ছাড়া আরো যেভাবে টাকা তুলতে পারবেন জানতে পড়ুন- এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার নিয়ম। |
চেক বই হারিয়ে গেলে যেভাবে নতুন চেক পাবেন
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যাংক হারিয়ে যাওয়া পুরোনো চেক বাতিল করবে এবং আপনাকে একটি নতুন চেকবুক ইস্যু করে দিবে। এরপর আপনি স্বাভাবিক হিসাবে আপনার ব্যাংকিং কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে পারবেন। এ অবস্থায় কেউ আর আপনার চেক বুক ব্যবহার করতে চাইলেও তা আর ব্যবহার করতে পারবে না।
চেক বই হারিয়ে গেলে আপনার প্রথম কাজই হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার ব্যাংকে জানানো৷ এতে ব্যাংক দ্রুতই যেকোনো প্রতারণামূলক কার্যকলাপ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে। যার ফলে আপনার টাকা হারানোর যে রিস্ক তা আর থাকবে না।
শেষকথা
নতুন চেক বইয়ের জন্য আবেদন এর নিয়ম ব্যাংক ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। অনেক সময় কিছু ব্যাংকে এতো বড় আবেদন না লিখে বা এতো কিছু না করে শুধু আপনার একাউন্ট নাম্বার কাগজে লিখে নিয়ে ব্যাংকে শাখায় যোগাযোগ করলে তারা প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। যাই হোক, আপনার ব্যাংকে যে সিস্টেমটি কার্যকর হয় তা এপ্লাই করুন।
যদি আপনার ব্যাংকের অনলাইন সুবিধা থাকে, তবে তাদের অনলাইনে চেক আবেদনের সুবিধাটি নিতে পারেন। এতে করে আপনার কষ্ট করে ব্যাংকে গিয়ে সময় নষ্ট করতে হবে না। আবার যদি রিকুইজিশন স্লিপ ব্যবহার করেন, এটিও আপনার জন্য সহজ হবে একটি নতুন চেক বুক পেতে।
কোনো কারণে যদি রিকুইজিশন স্লিপ হারিয়ে ফেলেন বা আপনার আগের চেক বুকটি হারিয়ে ফেলেন তবে তা ব্যাংকে জানান। তারা আপনার জন্য প্রয়োজনিয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করবে এবং একটি নতুন চেক বুক পেতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুন- ইসলামীক ব্যাংকিং সিস্টেম
আরো পড়ুন
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর জন্য আবেদন
- ব্যাংক ঋণের জন্য ম্যানেজারের নিকট আবেদন
- ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
- অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট চেক করার নিয়ম
- এক ব্যাংকের চেক অন্য ব্যাংকে জমা দেয়ার নিয়ম
- ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম
- ব্যাংক এবং এনজিও এর মধ্যে পার্থক্য