বিকাশ থেকে রকেটে টাকা পাঠাতে ‘বিনিময়’, আছে আরও সুবিধা
চালু হয়ে গেলো আর্থিক সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আন্তঃলেনদেন সেবা ‘বিনিময়’ এর মাধ্যমে। এটি এমন একটি সরকারি সেবা, যার মাধ্যমে বিকাশ, রকেট এর মত মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলোর পাশাপাশি ব্যাংকের সাথেও…
চালু হয়ে গেলো আর্থিক সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আন্তঃলেনদেন সেবা ‘বিনিময়’ এর মাধ্যমে। এটি এমন একটি সরকারি সেবা, যার মাধ্যমে বিকাশ, রকেট এর মত মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলোর পাশাপাশি ব্যাংকের সাথেও লেনদেন করা যাবে। বিনিময় এর হাত ধরে একটি ক্যাশবিহীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
বর্তমানে গ্রামে বসবাসকারী জনসংখ্যার মধ্যে অসংখ্য মানুষের ব্যাংকে কোনো প্রকার একাউন্ট নেই। এদিকে বিকাশ, রকেট এর মত সেবাগুলো পৌঁছে গেছে দেশের সকল কোণায়। নতুন এই আন্তঃলেনদেন সেবার কল্যাণে দেশের সকল মানুষ একাধিক প্ল্যাটফর্মে অর্থ আদানপ্রদান করার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন।
ইন্টারঅপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্লাটফর্ম (আইডিটিপি) নামের এই আন্তঃলেনদেন সেবা গ্রাহকের কাছে ‘বিনিময়’ নামে পরিচিত করা হচ্ছে। বিনিময়ে সংযুক্ত ব্যাংক ও এমএফএস এর মধ্যে পারস্পরিক অর্থ লেনদেন করা যাবে বেশ সহজে। অর্থাৎ বিনিময় এর মাধ্যমে রকেট থেকে বিকাশে, বা বিকাশ থেকে ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তরের প্রক্রিয়া হবে বেশ সহজ।
বিনিময় একাউন্ট খুলে এমএফএস, ব্যাংক ও পিএসপি সেবাগুলোর মধ্যে পারস্পরিক লেনদেন করা যাবে। এছাড়া পরবর্তীতে বিভিন্ন পরিষেবার ফি ও বিল পরিশোধও করা যাবে এর কল্যাণে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে প্রায় ১১টি ব্যাংক, এমএফএস ও পিএসপি যুক্ত হচ্ছে বিনিময়ে।
এমএফএস সার্ভিস গুলোর মধ্যে রয়েছে বিকাশ, রকেট ও এম ক্যাশ। অন্যদিকে ব্যাংক এর মধ্যে এই সেবায় যুক্ত হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক, বেসরকারি ব্র্যাক, ইস্টার্ন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, পূবালী, আল-আরাফাহ ইসলামী, ইউসিবি ও মিডল্যান্ড ব্যাংক। এছাড়া পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) টালি পে-ও যুক্ত হচ্ছে এই সেবায়।
এর আগে এই ধরনের আন্তলেনদেন সেবা চালু হতে হতেও হয়নি। এবার অবশেষে বিনিময় এর হাত ধরে বাংলাদেশে একটি ক্যাশলেস অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হয়ে উঠার পথে এগোচ্ছে।
বিনিময় কিভাবে কাজ করবে
বিনিময় ব্যবহার করতে হলে প্ল্যাটফর্মটিতে একাউন্ট খুলতে হবে। যাতে এমএফএস, ব্যাংক ও পিএসপি সংযুক্ত রাখা যাবে। একাউন্ট খোলার পর গ্রাহকের মেইল এর মতো একটি আইডি তৈরী হবে যা ব্যবহার করে লেনদেন করা যাবে।
যাকে টাকা পাঠাতে চান উক্ত গ্রাহকেরও বিনিময় একাউন্ট থাকা লাগবে। মূলত একাধিক একাউন্টের একটি ওয়ান-স্টপ সার্ভিস হিসাবে কাজ করবে এটি। লেনদেনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র গ্রাহকের বিনিময় আইডি প্রদান করলেই হবে।
এ ব্যাপারে বিকাশ কাস্টমার কেয়ার থেকে জানানো হয়েছে “বিকাশ গ্রাহক সহজেই বিকাশ ব্যালেন্স থেকে টাকা ট্রান্সফার করে ব্যাংক, এমএফএস, পিএসপি অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে পারেন। একইভাবে, বিকাশ গ্রাহকরা রিয়েল টাইমে তাদের নিজ নিজ বিকাশ অ্যাকাউন্টে ব্যাংক, এমএফএস, পিএসপি, পিএসও অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গ্রহণ করতে সক্ষম হবেন।
এই পরিসেবাটি পেতে, সক্রিয় অবস্থায় থাকা বিকাশ গ্রাহককে প্রয়োজনীয় তথ্য সহ বিনিময়-এ একাউন্ট করতে হবে এবং একটি বিনিময় ভার্চুয়াল আইডি (ভিআইডি) এবং পিন সেট করতে হবে। বিনিময় সেবা বিকাশের হোম পেইজে অন্তর্ভুক্ত আছে। সফল ভাবে রেজিস্ট্রেশনের পর, গ্রাহক বিনিময়-এ লেনদেন করতে ভিআইডি এবং পিন ব্যবহার করতে পারেন।”
বিনিময় ব্যবহারের খরচ
বিনিময় ব্যবহার করে অর্থ লেনদেনের খরচ বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করে দিয়েছে। যেকোনো এমাউন্টের অর্থ লেনদেনের জন্য ৫০পয়সা সেবা ফি অর্থগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান দিবে বিনিময়কে। আবার ব্যাংক, এমএফএস ও পিএসপি এর মাধ্যমে পাঠানো অর্থের ক্ষেত্রে ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা পর্যন্ত শতাংশ হারে সেবা ফি নিতে পারবে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। ব্যাংক থেকে ব্যাংকে অর্থ পাঠাতে সর্বোচ্চ ১০টাকা ফি কাটতে পারবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।
বিনিময় সম্পর্কে আপনার মতামত কি? আমাদের জানাতে পারেন কমেন্ট সেকশনে।
ব্যাংকিং নিউজ সম্পর্কে আরো জানতে পড়ুন ব্যাংকিং নিউজ। হোম পেজে যেতে ক্লিক করুন bankline এ।